মাথাব্যথা সারাতে ঘরোয়া উপায়

ডেস্ক রিপোর্ট, হেলথ নিউজ | ১৮ মে ২০১৮, ০১:০৫ | আপডেটেড ২ জুন ২০১৮, ১২:০৬

cinzin1

জীবনে কখনও মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়নি এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। দৈনন্দিন জীবনের স্ট্রেস, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া, বেশি মাত্রায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার ইত্যাদি নানা কারণে হতে পারে এটি।

ব্যথা হলেই তা কমানোর সহজ উপায় হল ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে নেওয়া। তবে যে কোনো ওষুধেরই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হুটহাট ওষুধ খেয়ে নেওয়াও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এরচেয়ে বরং অন্য কোনোভাবে মাথা ব্যথা কমানোর চেষ্টা করাই ভালো।

আমাদের হাতের কাছেই থাকা এমন কিছু জিনিস দিয়ে মাথাব্যথা কমানো যায়।

আদা

মাথার রক্তনালীর প্রদাহ কমিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মাথা ব্যথা দূর করতে পারে আদা। আর এটা হজমের সহায়তা করে। তাই মাইগ্রেনের অন্যতম লক্ষণ বমি বমি ভাব থেকে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব। আদা চা বা সমপরিমাণ আদার রস ও লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে পান করলে আরাম পাওয়া যায়। দৈনিক এক থেকে দুবার এ পানীয় খেতে হবে। এছাড়া দুই টেবিল চামচ পানিতে আদার গুড়া মিশিয়ে কপালে লাগালেও উপকার পাওয়া যাবে।

সুগন্ধি তেল

পেপার মেন্ট, ল্যাভেন্ডার তেলের সুবাস মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। পেপারমেন্ট তেলে মেন্থল থাকে, যা শরীরে রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখে। অন্ধকার ঘরে বসে এ তেলের সুঘ্রাণ নিলে কমবে মাথাব্যথা। এছাড়া এক চামচ আমন্ড তেল বা সামান্য পানির সঙ্গে তিন ফোঁটা এ তেল মিশিয়ে তা মাথার পেছনের দিকে ম্যাসাজ করা যেতে পারে। কপালে পেপার মেন্ট পাতার গুঁড়া লাগালে বা এক কাপ গরম পানিতে শুকনা পেপারমেন্ট মিশিয়ে ১০ মিনিট রোখার পর ছেঁকে নিয়ে মধু মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া সম্ভব।

ল্যাভেন্ডার ওয়েলে যে শুধু সুঘ্রাণই রয়েছে তা নয়। মাথা ব্যথা দূর করতেও এর কোনো জুড়ি নেই। একটা টিস্যুতে কয়েক ফোঁটা এ তেল নিয়ে গন্ধ শুকতে হবে। অথবা দুকাপ ফুটন্ত গরম পানিতে দু ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনসিয়াল তেল মিশিয়ে তার ভাপ নিতে হবে। মাথা ব্যথা কমানোর অপর উপায় হলো এক চামচ আম- বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে দুই থেকে তিন ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে কপালে ম্যাসাজ করা।

হিলিং টাচ হাসপাতালের ড. মনোজ কে. আহুজা বলেন, “গরম পানিতে ল্যাভেন্ডার ও পেপারমেন্ট তেল মিশিয়ে তাতে পা ডুবিয়ে রাখলেও মাথা ব্যথা কমতে পারে।”

এছাড়া এক বা দু ফোঁটা থাইম বা রোজমেরি এসেনসিয়াল তেল হালকাভাবে কপালে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখলেও উপকার পাওয়া সম্ভব।

দারুচিনি

বহুল ব্যবহৃত এ মশলাটিও মাথাব্যথা দূর করতে সক্ষম। দারুচিনির গুঁড়ার সঙ্গে অল্প কিছু পানি মিশিয়ে বানাতে হবে ঘন পেস্ট। এরপর এটা কপালে লাগিয়ে আধা ঘন্টা শুয়ে থাকতে হবে। পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

হালকা ব্যয়াম

মাথা ও ঘাড়ের খুবই সাধারণ কিছু ব্যয়ামেও মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। থুতনিকে সামনে -পেছনে, বামে-ডানে ঘোরাতে হবে। এছাড়া ঘাড়ের পেশিকে শিথিল করতে ধীরে ধীরে ঘাড়কে ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী এবং কাঁটার বিপরীত দিকে ঘোরাতে হবে।

ঠাণ্ডা বা গরম কিছুর ব্যবহার

ঘাড়ের পেছনে বরফ লাগালে মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কারণ যে প্রদাহের কারণে মাইগ্রেন হয়, বরফের ঠাণ্ডা তা কমায়। এছাড়া গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখলেও মাথাব্যথা কমে যায়। ব্যথার তীব্রতা বেড়ে গেলে পানিতে কিছুটা সরিষা গুঁড়া মেশালেও উপকার পাওয়া যাবে।

এছাড়া ঠাণ্ডা বা গরম পানিতে ভোজানো কাপড় মাথায় ৫ মিনিট দিয়ে রাখলে মাথাব্যথা কমে বলে জানিয়েছেন ড. আহুজা। এ কাজটি করতে হবে বেশ কয়েকবার।

লবঙ্গ

লবঙ্গতে ব্যাথানাশক উপাদান রয়েছে। কয়েক টুকরো লবঙ্গ গুঁড়া করে তা একটা রুমালে নিয়ে নিতে হবে। এরপর ব্যথা না কমা পর্যন্ত গন্ধ শুকতে হবে। এছাড়া এক টেবিল চামচ নারিকেল তেল, সামান্য সি সল্ট ও দু ফোটা লবঙ্গ তেল মিশিয়ে হালকাভাবে মাথায় ম্যাসাজ করাও যেতে পারে।

পুদিনা পাতা

জোরালো গন্ধ থাকায় মাথাব্যথা কমাতে পুদিনা পাতার ব্যবহার করা যায়। এক কাপ ফুটন্ত পানিতে ৩-৪টি তাজা পুদিনা পাতা দিয়ে আরো কিছুক্ষণ ফোটাতে হবে। এরপর এতে কিছুটা মধু মিশিয়ে ধীরে ধীরে এ চা পান করতে হবে। এছাড়া কয়েকটি টাটকা পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেয়ে বা কয়েকটি পাতা ফুটিয়ে নিয়ে সে ভাপটা নিলেও কাজ হবে।

আপেল

মাথাব্যথা কমাতে আপেল ও আপেল সাইডার ভিনেগার দুটোই ব্যবহার করা যায়। আধা কাপ পানি ও আধা কাপ আপেল সাইডার ভিনেগার ঢাকনা দেওয়া কোনো পাত্রে জ্বাল দিতে হবে। এরপর চুলা থেকে পাত্রটি নামিয়ে একটা তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে ভাপ নিতে হবে। সাইনাসের ব্যথা থেকে এটা তাৎক্ষণিক মুক্তি দেয়।

আর সকালে মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙ্গলে এক টুকরো আপেলে সামান্য লবণ ছড়িয়ে থেতে হবে। এরপর খেতে হবে হালকা গরম পানি। অথবা এক গ্লাস পানিতে দু চা চামচ পরিমাণ আপেল সাইডার ভিনেগার, মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খেলেও কমবে ব্যথা। দিনে দুই থেকে তিনবার এটা খেতে হবে।

যোগাসন

যোগাসনে একইসঙ্গে শারীরিক নড়াচড়া, সঠিকভাবে শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ ও মেডিটেশন করা হয়। এতে করে মন স্থির, পেশি প্রসারিত হয়। ফলে দুঃশ্চিন্তা দূর হয়। নিয়মিত যোগাসন করলে তাই ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব। কথায় আছে, নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধই ভালো।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু

আঙুর কেন খাবেন?

ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সব টিপস...

চকলেটে ব্রণ হয়?

এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন...

      ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

300-250
promo3