শিরোইলে অ্যামোনিয়া গ্যাসে আটকে আসে নিঃশ্বাস

তারেক মাহমুদ, রাজশাহী প্রতিনিধি, হেলথ নিউজ | ১৩ আগস্ট ২০১৮, ১৯:০৮ | আপডেটেড ১৩ আগস্ট ২০১৮, ০৭:০৮

gas

গুদামের উদ্বৃত্ত সার খোলা জায়গায় রাখায় রাসায়নিক দূষণের দুর্ভোগ পোহাচ্ছে রাজশাহীর শিরোইল কলোনি এলাকার বাসিন্দারা।

রাজশাহী নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিরোইল কলোনি এলাকার বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআইসি) এর সারের গুদাম। এই গুদামে বছরের বেশির ভাগ সময়ই ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত ইউরিয়া সার মজুদ থাকে। ফলে সারের বস্তা দিনের পর দিন গুদামের বাইরে স্তূপ হয়ে পড়ে থাকে খোলা আকাশের নিচে।

এই জনবসতিপূর্ণ এলাকার বসবাসরতরা বলছেন, রোদ-বৃষ্টিতে এই সার গলে বছরের বেশিরভাগ সময়ে এলাকার চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাতাসে অ্যামোনিয়া গ্যাসের কারণে মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে আসছে নিঃশ্বাস।

গুদামের আশপাশে বসবাসরত পরিবারের সদস্যদের শরীরের মাঝে এখন বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। চোখজ্বলা, চোখ থেকে পানি ঝরা এটা এখন নিত্য দিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুদামের সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচল করলে সারের ঝাঁঝালো গন্ধে হাঁচি উঠা শুরু হয়।

বিষাক্ত গন্ধের কারণে এখানে বসবাসরত প্রায় ১০০ পরিবারের জীবন এখন অতিষ্ঠ। এলাকার ভাড়াটিয়ারা ইতোমধ্যে গুদামের আশেপাশে থেকে চলে গেছে অন্য এলাকায়।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণাগার পরিষদ রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ওবায়দুল হক হেলালী হেলথ নিউজকে বলেন, “এই দুর্গন্ধ ও চোখ জ্বালার কারণ অ্যামোনিয়া গ্যাস। অ্যামোনিয়া ও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস দিয়ে প্রস্তুত করা হয় ইউরিয়া সার। এই সার গলতে শুরু করলে দুর্গন্ধযুক্ত অ্যমোনিয়া গ্যাস উৎপন্ন হয়। এটি বাতাসের সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়ে চারপাশের এলাকায়।”

রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. সঞ্জিত কুমার সাহা হেলথ নিউজকে বলেন, “অ্যামোনিয়া বেশ বিপজ্জনক গ্যাস। এ গ্যাসে আক্রান্ত হলে তা ফুসফুসে ও বুকে ছড়িয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে কাশি, বুকে তীব্র ব্যথা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয় এবং ছোট বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হতে পারে। দেহের স্মায়বিক ব্যবস্থাতে প্রভাব ফেলে এই গ্যাস।”

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মো. খলিলুর রহমান হেলথ নিউজকে বলেন, অ্যামোনিয়ার কারণে শ্বাসকষ্টসহ অনেক রোগ সৃষ্টি হতে পারে। প্রথম অবস্থায় মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে এর মাত্রা যদি দীর্ঘ হয়, তা রক্তের মাধ্যমে মিশে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

“এছাড়া এই গ্যাসে আক্রান্ত হলে ফুসফুসে ও বুকে ছড়িয়ে যেতে পারে। পরে কাশি, বুকে তীব্র ব্যথা হতে পারে। এছাড়া শিশুদের নিউমোনিয়া হতে পারে।”

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভেতরে জায়গা না হওয়ায় গুদামের বাইরে ট্রাকে ট্রাকে সারের বস্তা সাজিয়ে বাইরে রাখা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, বছরের কয়েকমাস গুদামের ভেতরে জায়গা না হলে পাশে খোলা আকাশের নিচে সারের বস্তার স্তূপ করে রাখা হয় এবং উপরে পলিথিন দিয়ে রাখা হয়। বছরের বেশির ভাগ সময় এভাবে সার বাইরে পড়ে থাকে।

গুদামের পাশে বসবাসরত একাধিক নারী বলেন, সারের দুর্গন্ধে শিশুদের নিঃশ্বাস নিতে খুব সমস্যা হয়। মাঝে-মধ্যে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, তারা পেটের তাগিদে এখানে কাজ করছেন। এখানে কাজ করে এর আগে অনেক শ্রমিক নানান রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ।

গুদামের ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া দিতে চাননি তেমন কোনো তথ্য। তিনি হেলথ নিউজকে বলেন, “ঢাকা থেকে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ হয়। তাদের সাথে কথা বললে ভালো হয়। তবে এখান থেকে এই গুদাম সরিয়ে নগরীর আমচত্বর এলাকায় নতুন করে গুদাম করার কথা হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে হয়ত এটা হয়ে যাবে।”

তিনি দাবি করেন, এই দুর্গন্ধ ছড়ানোর ব্যাপারে এক বার অভিযোগ হওয়ায় তারা একটু সতর্কভাবে কাজ করেন। কয়েক মাস ধরে তারা বাইরে সার ফেলে রাখেন না। তবে মাঝে মাঝে গুদামে যখন জায়গা না হয় সে সময় সার বাইরে রাখা হয়। তবে সে সারের বস্তাগুলো কিছু দিনের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়।

স্থানীয়রা গুদামটি অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার জন্য কয়েক মাস আগে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ করেছেন। এর পরেও তেমন কোনো কাজ হয়নি।

গুদামের পাশের ব্যবসায়ী রিপন আলী ও শহিদুল ইসলাম জানান, এখানে চারপাশে প্রায় ১০০ মতো বাড়ি রয়েছে। দীর্ঘদিন তারা এই সমস্যায় রয়েছে। তাই খুব দ্রুতই এই গুদাম এখান থেকে সরানোর দাবি জানান।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপ-পরিচালক মামুনুর রশীদ হেলথ নিউজকে বলেন, “আমরা নির্দেশ দিয়েছি দ্রুত এই এলাকা থেকে গুদাম নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা এই সমস্যার সমাধানের কথা বলেছেন। তাদের সাথে কথা বললে আরও ভালো হয়।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি হেলথ নিউজকে বলেন, “গুদামটি ঢাকা থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই এই বিষয়ে তাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।”

বিষয়:

নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

দিল্লির বায়ুদূষণ ঠেকাতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর পরিকল্পনা

ডেঙ্গুতে আরও ১২ জনের মৃত্যু

বিষাক্ত ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন দিল্লি

খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যসেবা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করেছিল: প্রধানমন্ত্রী

ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছুঁই ছুঁই

টেকনাফে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর

ডেঙ্গু: হাসপাতালে ভর্তি ১৫১২ রোগী

গ্যাসের ওষুধের এত বিক্রি! কেন?

ডেঙ্গু: ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জনের মৃত্যু

রক্তদাতার সন্ধান মিলবে অ্যাপে

স্বাস্থ্যখাতে চীনা বিনিয়োগের আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

ডেঙ্গু: ১৮৯৫ রোগী হাসপাতালে ভর্তি

দেশে ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা

অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা একটি চ্যালেঞ্জ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ডেঙ্গু: হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৭৯৪ জন

ডিম-আলুর দামে পতন

ডেঙ্গুতে প্রাণহানি ১৪০০ ছাড়াল

সুস্থ আছে প্রথম টেস্ট টিউব শিশু ‘দানিয়া’

স্বাস্থ্য-শিক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ

ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি ১৬৩৮, মৃত্যু ১৩ জনের

স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু

আঙুর কেন খাবেন?

ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সব টিপস...

চকলেটে ব্রণ হয়?

এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন...

      ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

300-250
promo3