গর্ভধারণে যা জানা জরুরি
ডেস্ক রিপোর্ট, হেলথ নিউজ | ৯ জুন ২০১৮, ২৩:০৬ | আপডেটেড ৯ জুন ২০১৮, ১১:০৬
একটি শিশুকে পৃথিবীর আলোয় আনার প্রধান কাজটি একজন নারীকেই করতে হয়। তাই গর্ভধারণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় জানাটাও তার জন্য জরুরি। সন্তান ধারণে সক্ষমতা-অক্ষমতার বিষয়ে প্রচলিত অনেক বিশ্বাসের ভিত্তি যেমন নেই, আবার অনেক বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলছেন চিকিৎসকরা।
বয়স একমাত্র বাধা নয়
অধিকাংশ সময়ই বয়স ‘৩৫’ বছর হওয়ার আগেই সন্তান জন্মদান নিয়ে পরিবার থেকে চাপ আসে একজন নারীর ওপর। ধারণা করা হয়, এরপর থেকে সন্তান জন্ম দানের ক্ষমতা কমতে থাকে। এ বিষয়ে নিউ ইয়র্কভিত্তিক ফার্টিলিটি ক্লিনিক সিসিআরএম’ এর মহাব্যবস্থাপক, ফাউন্ডিং পার্টনার ও প্র্যাকটিস ডিরেক্টর ব্রেইন লেভিন বলেন, ৩৫ বছরের চেয়েও অনেক কম বয়সী নারীরাও সন্তান জন্মদানে অক্ষম হতে পারে। তবে সন্তান ধারণের চেষ্টা না করা পর্যন্ত এটা জানা সম্ভব নয়।
সময়ের সঙ্গে কমে ডিম্বানুর মান
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন নারীর মা হওয়ার সম্ভাবনা কমতে থাকে। বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কারণে সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকিও বাড়ে। ওরিগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক পাওলো আমাতো বলেন, “বিশেষ করে ৩০ পেরোনোর পর নারীদের ডিম্বানুর সংখ্যা ও গুণগত মান কমতে থাকে। তাই এসময় গর্ভধারণ কঠিন হয়ে পড়ে। একইসঙ্গে গর্ভপাত ও অস্বাভাবিক আচরণের সন্তান জন্মগ্রহণের ঝুঁকি বাড়ে।”
অক্ষমতা পুরুষেরও হতে পারে
সন্তান না হলে অধিকাংশ সময়ই নারীকে দায়ী মনে করা হয়। কিন্তু সন্তান ধারণের বিষয়টি একজন নয়, বরং দুজনের ওপর নির্ভর করে। ড. লেভিন বলেন, পরীক্ষা নিরীক্ষা করলে দেখা যায়, সন্তান জন্মদানে অক্ষমতার দায় আসলে ৪০ শতাংশ হল নারীর, ৪০ শতাংশ পুরুষের। বাকি ২০ শতাংশ ঘটে অজানা কারণে।
নিশ্চিত হওয়া কঠিন কিছু নয়
সিস্ট বা অন্য কোনো কারণে বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি ঘটছে কি না, তা জানতে আগে সার্জারির প্রয়োজন হত। তবে এখন চিকিৎসা ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হওয়ায় আল্ট্রা সাউন্ড, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই এটা জানা সম্ভব।
ক্ষমতা কমে যাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত
প্রত্যেকের শারীরিক গঠন আলাদা। ড. লেভিন বলেন, ব্যক্তির জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গেও সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন নারী ম্যারাথনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে তার নিয়মিত ঋতুচক্র পিছিয়ে যেতে পারে। আবার সেই নারীই প্রশিক্ষণ গ্রহণ বন্ধ করে দিলে তা ঠিক হয়ে যেতে পারে।
অক্ষমতার অনেক কারণই চিকিৎসাযোগ্য
ফ্যালোপেইন টিউবের ব্লক, জরায়ুতে ফাইব্রয়েড, ডিম্বাশয়ের সিস্ট, থাইরয়েডের সমস্যাসহ সন্তান ধারণে অক্ষমতার বেশ কিছু কারণ সহজেই নিরাময়যোগ্য।
ওভ্যুলেশনের হিসেব অনুযায়ী গর্ভধারণের চেষ্টা করা
পুরো মাসের সব দিন নয়, বরং ওভ্যুলেশনের আগে ও কাছাকাছি কয়েকদিনই (৫ দিনের মতো) কেবল গর্ভধারণে সফল হওয়া সম্ভব। সাধারণত পরবর্তী ঋতুচক্র শুরু হওয়ার ১৪ দিন আগে ওভ্যুশেলন ঘটে। তাই গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময় এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
ওভ্যুলেশনের সঠিক সময় নির্ধারণ
ইয়েল মেডিকেল বিদ্যালয়ের অবসট্রেটিক, গাইনোকোলজি ও রিপ্রোডাকটিভ সায়েন্সের অধ্যাপক মেরি জেন মিনকিন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আগে নিজে নিজেই ওভ্যুলেশনের সঠিক সময় নির্ণয়ের পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ওষুধের দোকানে কিনতে পাওয়া ওভ্যুলেশন কিট দিয়ে সহজেই এটা পরীক্ষা করা যায়। আর এটা সঠিকও হয়। যদি পরীক্ষায় ধরা পড়ে যে ওভ্যুলেশশন ঘটছে না তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আর ওভ্যুলেশন যদি ঘটে তাহলে এর সঠিক সময় নির্ধারণ করে সেভাবে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে হবে।
চিকিৎসককে সব খুলে বলা
যৌনবাহিত কোনো রোগ থাকলে ফ্যালোপেইন টিউব ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর এতে গর্ভধারণ কঠিন হতে পারে। কারণ ফ্যালোপেইন টিউব দিয়েই জরায়ুতে পৌঁছায় ডিম্বানু। তাই গর্ভধারণ বিষয়ক চিকিৎসা শুরু করলে চিকিৎসককে অবশ্যই সব খুলে বলা উচিৎ।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
অতিরিক্ত ওজন বা কম ওজনসহ সুস্বাস্থ্যের অনেক বিষয় জড়িত সন্তান ধারণের সঙ্গে। তাই গর্ভধারণের পরিকল্পনা করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ, ভিটামিন গ্রহণ, ধুমপান ও মদ্যপান বাদ দেওয়াসহ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা উচিৎ।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
বিষয়: শিশু, স্বাস্থ্যকর জীবন
নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু
আঙুর কেন খাবেন?
ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সব টিপস...
চকলেটে ব্রণ হয়?
এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।
আরও পড়ুন...
ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?