দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক, হেলথ নিউজ | ৮ জুলাই ২০২৩, ২১:০৭ | আপডেটেড ১০ জুলাই ২০২৩, ০৯:০৭
চিকিৎসকরা বলছেন, এবার যারা মারা গেছেন ডেঙ্গুতে, তাদের অধিকাংশই দ্বিতীয়বার আক্রান্ত।
ডেঙ্গুর চারটি ধরনের মধ্যে এবার বেশি রোগী পাওয়া যাচ্ছে ডেন টু ও ডেন থ্রির রোগী। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রথমবার ডেন ওয়ানে আক্রান্ত হয়ে অ্যান্টিবডি তৈরি হলে সেটি ডেন টু বা থ্রি প্রতিরোধে কাজ করে না।
কাজেই দ্বিতীয়বার আক্রান্ত সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবীর বলেন, এখন হাসপাতালে যে রোগী আসছে তাদের অনেকেই দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, যখন ডেঙ্গুর ভাইরাসের একটি ধরন প্রথমবার শরীরে আক্রমণ করে তখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু দ্বিতীয়বার অন্য ধরন আক্রমণ করলে সেটা তা প্রতিরোধ করতে পারে না।
“ধরুন আপনি প্রথমবার ডেন-ওয়ানে আক্রান্ত হলেন, শরীরে ওই ধরনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আছে। দ্বিতীয়বার যদি আপনি ডেন-টু আক্রান্ত হন, তাহলে সেটা নিরাপত্তা দেয় না। আবার ডেন-ওয়ানে সংবেদনশীল থাকাতে ডেন-টু দিয়ে যদি আক্রান্ত হয় তাহলে সেটা তাকে প্রতিরোধ দেবে না, কিন্তু অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়া করবে। অতিমাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি করতে গিয়ে এত প্রতিক্রিয়া হয় যে রোগীর প্লাজমা লিকেজ হয় এবং শকে চলে যায়।”
“আমরা পরীক্ষা করে দেখতে পাই অনেকেরই আইজিজি পজিটিভ। আগের মতো পাঁচ-সাতদিন পর শকে যাবে এমন হচ্ছে না। দুই-তিনদিনের মাথায় প্রেসার কমে যায়, খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”
দ্বিতীয়বার আক্রান্ত ব্যক্তির ঝুঁকির ব্যাখ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল বলেন, “যদি কেউ প্রথমবার ডেন-ওয়ানে আক্রান্ত হয়, তার গায়ে ব্যথা হবে, সামান্য উপসর্গ হবে। কিন্তু যদি তিনি দ্বিতীয়বার ডেন টু বা ডেন থ্রি দিয়ে আক্রান্ত হন, তাহলে অন্য অনেক সমস্যা দেখা দেবে।
“ডেঙ্গুর আশঙ্কার জায়গা হচ্ছে কেউ প্রথমবার আক্রান্ত হলে অবস্থা এত গুরুতর হয় না। দ্বিতীয়বার বা তৃতীয়বার হলে সিভিয়ারিটি অনেক বেশি।”
এ বছর যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের ডেথ রিভিউয়ের কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মৃতদের তবে লক্ষণ-উপসর্গ দেখে তারা মনে করছেন মৃতদের বেশিরভাগই দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
প্রকোপ বেশি ডেন টু ও থ্রিয়ের
চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর জীবাণুর চারটি ধরন – ডেন-ওয়ান, ডেন-টু, ডেন-থ্রি এবং ডেন-ফোর এ রোগীরা আক্রান্ত হন।
অন্তত ২০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর দেখেছেআক্রান্তদের ৬২ শতাংশ ডেন-টু এবং ৩৮ শতাংশ ডেন-থ্রিতে আক্রান্ত হয়েছে।
অধ্যাপক মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “গত ২০-২৫ বছরে বাংলাদেশে কত মানুষের ডেঙ্গু হয়ে গেছে এর সঠিক তথ্য নেই। কারণ, অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু রোগ নির্ণয় করা হয়নি। অনেকে চিকিৎসকের কাছেই যাননি। ফলে প্রকৃত সংখ্যাটা অনেক বেশি। এ কারণে এবার যত বেশি মানুষ আক্রান্ত হবেন, তাদের অনেকেই দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবেন।”
বাংলাদেশে ষাটের দশকে দেশে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলেও রোগটি বেশি ছড়াচ্ছে ২০০০ সাল থেকে।
২০২২ সাল পর্যন্ত হিসাবে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪৮ জন রোগী। এর মধ্যে শেষ পাঁচ বছরেই ভর্তি হন ২ লাখ ৩ হাজারের বেশি। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হননি তারা এই হিসাবে আসেনি।
বিষয়: special3
নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু
আঙুর কেন খাবেন?
ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সব টিপস...
চকলেটে ব্রণ হয়?
এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।
আরও পড়ুন...
ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?