ভারতের নিপা বাংলাদেশের নিপার মতোই
ডেস্ক রিপোর্ট, হেলথ নিউজ | ২০ মে ২০১৮, ০২:০৫ | আপডেটেড ৫ জুন ২০১৮, ১২:০৬
কেরালায় সম্প্রতি যে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে সংক্রমিত ভাইরাসের মিল খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ভারতের বিজ্ঞানীরা।
ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় গত কিছু দিনে নিপা ভাইরাস সংক্রমণে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
প্রতিবেশী দেশটিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ; কেননা এটি খুব দ্রুতই মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে, আর দুই দেশের মানুষের বেশ যাতায়াত রয়েছে।
বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল, ২১টি জেলায় এই ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পেয়েছিলেন গবেষকরা। এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কৃত না হওয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। বাংলাদেশে পৌনে দুইশ আক্রান্তের মধ্যে প্রায় দেড়শ জনের মৃত্যু ঘটেছিল।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেরালায় সংক্রমিত নিপা ভাইরাসের সঙ্গে বাংলাদেশের সংক্রমিত ভাইরাসের মিল দেখতে পেয়েছেন ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (এনআইভি) গবেষকরা।
রোগাক্রান্ত এক ব্যক্তির লালা থেকে ভাইরাসের নমুনা নিয়ে তার জিন বিশ্লেষণ করে এই মিল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন পুনের এনআইভির পরিচালক দেবেন্দ্র মৌর্য।
বাংলাদেশের আগে ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায় প্রথম নিপা ভাইরাসের সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যায়। সে দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৬০ শতাংশের মৃত্যু ঘটেছিল।
অজ্ঞাত রোগ হিসেবে ২০০১ সালে বাংলাদেশে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ নজরে আসে। তিন বছর পরে ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষার মাধ্যমে একে নিপা ভাইরাস বলে শনাক্ত করা হয়। ২০১৩ সালের দিকে নিপা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ছিল আক্রান্তের ৮৮ শতাংশ।
এনআইভি পরিচালক দেবেন্দ্র বলেন, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের ভাইরাসের সঙ্গে তুলনা করে তারা দেখেছেন, বাংলাদেশের ভাইরাসটির সঙ্গেই কেরালাটির মিল রয়েছে।
বাংলাদেশে বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম মেহেরপুর জেলায় ঘটেছিল বলে গবেষকরা জানান।
কেরালার কোঝিকোদেতে এক বাড়ির ভেতরকার অব্যবহৃত কুয়া থেকে ভাইরাসটির সংক্রমণ শুরু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই কুয়াটির ভেতর বেশ কয়েকটি মৃত বাদুড় পাওয়া গেছে। ওই পরিবারটি বাবা ও দুই সন্তানসহ চার জন নিপায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
গত সপ্তাহেও কেরালায় দুজনের মৃত্যু ঘটেছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে। এই দুজনও কোঝিকোদে এলাকায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
কলকাতায় মারা যাওয়া এক সৈন্যও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সিনু প্রসাদ নামে কেরালার বাসিন্দা ওই সৈন্যের কর্মস্থল ছিল কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে। কেরালায় মাসখানেকের ছুটি কাটিয়ে ফেরার ৭ দিনের মাথায় গত ২০ মে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
নিপার প্রধান বাহক হিসেবে বাদুড়কে মনে করা হলেও মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য প্রাণীর সংস্পর্শেও ছড়াতে পারে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
নিপা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণগুলো হল- শ্বাসকষ্ট, মস্তিষ্কে প্রদাহ, জ্বর, মাথাব্যথা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, বিভ্রান্তভাব ও প্রলাপ বকা। আক্রান্ত রোগী সংক্রমণের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোমায়ও চলে যেতে পারেন।
কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি বলে বিশ্ব স্থাস্থ্য সংস্থা বলছে, নিবিড় পরিচর্যাই আক্রান্ত ব্যক্তির একমাত্র চিকিৎসা।
নিপা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কাঁচা খেজুরের রস না খাওয়া, কোনো ধরনের আংশিক খাওয়া ফল না খাওয়া, ফলমূল পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে খাওয়া, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা।
নিপা ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক বলে রোগীর যত্নের সময়ও অন্যদের মা্ঝে তা ছড়াতে পারে।
রোগীর সংস্পর্শে আসার পর হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলার পাশাপাশি রোগীর খাবার অন্যদের থেকে আলাদা রাখার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা।
বিষয়: নিপা ভাইরাস
নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু
আঙুর কেন খাবেন?
ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সব টিপস...
চকলেটে ব্রণ হয়?
এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।
আরও পড়ুন...
ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?