ওজন কমানো নিয়ে এখন ব্যতিব্যস্ত সবাই; কত কিছুই না করা হয় এজন্য। কারও মতে, খাওয়া কমালেই ওজন কমানো সম্ভব। আবার কার মতে, শরীরচর্চা ছাড়া এটা অসম্ভব।
আসলে কী- বলছেন দিল্লির ‘নারিশ মি’ প্রতিষ্ঠানের পুষ্টিবিদ মনিষা আশোকন। তার ভাষ্য, ওজন বাড়ার আশঙ্কায় খাবারের প্রতি ভীতি বা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো এড়িয়ে চলে জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। গাড়ির মতো আমাদের শরীরেরও জ্বালানি (খাদ্য) প্রয়োজন। আর এ জ্বালানি হতে হবে পুষ্টিকর। তাই সুস্বাস্থ্য হল সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যের সমন্বয়।
আশোকান বলেন, একজন ব্যক্তি জিমে তিন ঘণ্টা ব্যয় করেও লাভবান নাও হতে পারে, যদি তার খাদ্যাভ্যাস ভালো না হয়। মাত্র ৫ মিনিটে একটা চিজ বার্গার খাওয়া গেলেও এটা যে ক্যালোরি দৈরি করে, তা পোড়াতে জিমে ব্যয় করতে হবে ২ ঘণ্টা। আর ক্যালরি পোড়ানোর এ বিষয়টি নির্ভর করে আমাদের বিপাক প্রক্রিয়ার ওপর।
তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে সারাক্ষণ চিন্তা না করে এবং প্রতিবার খাওয়ার পরপরই ওজন মেশিনে না উঠে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া উচিত বিপাক প্রক্রিয়ার হার বাড়ানোর ওপর।
পুষ্টিবিদ মনিষা আশোকান কী বলছেন, দেখে নেওয়া যাক-
১. পানি পান
এটা শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে, আসলে তা নয়। সারাদিন ক্যালরি পোড়াতে পানি পান গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা পালন করে।
২. শরীরচর্চা
শুধু শরীরচর্চা করার সময় যে শরীরের চর্বি পোড়ে, তা নয়। বরং শরীরচর্চা শেষ হয়ে গেলেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে। শরীরের ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার পরও পেশিতে অক্সিজেনের মজুদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় আরও বেশি পরিমাণে ক্যালরি ঝরতে থাকে।
৩. নিয়মিত বিরতিতে খাওয়া
একবেলার খাবার বাদ দেওয়ার অর্থ হলো ওজন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য থেকে সরে যাওয়া। নির্দিষ্ট বিরতিতে সঠিক পরিমাণে সঠিক খাদ্যগ্রহণে বিপাক হার বাড়ে। আর এর ফলাফল হলো ওজন কমে যাওয়া।
জিমে দুই ঘণ্টা ব্যয় করার প্রয়োজন নেই। এতে শরীরের উপর চাপ পড়ে। জিমে অতিরিক্ত শরীরচর্চার ফলে শরীর তার শক্তি যোগাতে পেশিকে পুড়িয়ে আরো চর্বি মজুদ করা শুরু করতে পারে। ফলাফল ওজন বৃদ্ধি।
একটা অব্যবহৃত গাড়ির যেমন ব্যাটারি অকেজো হয়ে যায়, আমাদের শরীরেও তাই ঘটে। তাই অতিরিক্ত শরীরচর্চা বাদ দিয়ে আমাদের উচিত প্রতিদিনই আগের দিনের চেয়ে একটু বেশি চলাফেরা করা।
সূত্র: এনডিটিভি