Site icon Health News

জন্ডিসে চাই সচেতনতা

রাজশাহীতে দিনে দিনে বেড়েছে জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের তথ্যে মতে, অতীতের তুলনায় গত দুই বছর থেকে জন্ডিস রোগীদের সংখ্য বেড়েছে অনেক। প্রতিদিন গোটা রাজশাহীর সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

চিকিৎসকরা জানান, খাবারে অসচেতনতার কারণেই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আক্রান্ত রোগীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। যারা বেশিরভাগ সময় বাইরের খাবার এবং মেসে-হোস্টেলে থাকছেন।

রামেক হাসপাতালের লিভার, পরিপাকতন্ত্র ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহা. হারুন আর রশীদ হেলথ নিউজকে বলেন, রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে চোখ, প্রস্রাব এবং গায়ের রঙ হলুদ হলে তাকে জন্ডিস বলে। বিভিন্ন কারণে জন্ডিস হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হেপাটাইটিস ভাইরাসজনিত জন্ডিসকেই সর্বসাধারণ জন্ডিস মনে করে।

বেশিরভাগ সময় কোন ওষুধ ছাড়াই এ রোগ ভালো হয়ে গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই এর জটিলতাগুলো মারাত্মক হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে বরে সতর্ক করেন তিনি।

ডা. হারুন বলেন, তাই তাই জন্ডিস হলে রোগী ও চিকিৎসকের প্রধান দায়িত্ব হল এর কারণ ও রোগের গভীরতা নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া।

জন্ডিস নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা কুসংস্কার থাকার কথাও বলেন তিনি।

ডা. হারুন বলেন, “জন্ডিস সম্পর্কে এখনও অনেক কুসংস্কার বা ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন- অরুচি বা বমি বমি ভাবের কারণে যদি রোগী খেতে না পারেন, তাহলে রোগীর রুচি হয় এবং খেলে হজম করতে পারেন এমন খাবরই রোগীকে দেওয়া হয়। কিন্তু সত্যিকার অর্থে তেমন কোনো খাবারই রোগীর জন্য নিষিদ্ধ নয়।

“আবার অনেকেই রাস্তার পাশের আখ মাড়াইয়ের কল থেকে আখের রস রোগীকে খেতে দেন। জন্ডিস চিকিৎসায় এর কোনো বাড়তি গুণ নেই। বরং অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরির কারণে এ থেকে ডায়রিয়া কিংবা টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।”

তিনি আরও বলেন, “অনেক হলুদ দেওয়া তরকারি খেতে বারণ করেন। হলুদ কিংবা সহজভোজ্য তেলে রান্না করা ক্ষতিকারক নয়। আবার অনেকে হাতুড়ে ডাক্তার, ওঝা বা কবিরাজ দ্বারা বিভিন্নভাবেই জন্ডিসের বিভিন্ন অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে।”

জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীর খাবারের বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাহাবুবুর রহমান খান বাদশা হেলথ নিউজকে বলেন, “জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীরা না জেনে এই সময় খাবার নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে। কিন্তু এই সময় খাবার নিয়ে বিভ্রান্তি হওয়ার কোনো কারণ নেই। চিন্তা না করে রোগীকে স্বাভাবিক সুষম খাবার খেতে হবে এবং নিরাপদ পানি পান করতে হবে।”

তবে এ সময় চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

Exit mobile version