Site icon Health News

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অন্দরে

বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর অন্যতম জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের সরকারি এই হাসপাতালটিতে হৃদরোগের যাবতীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

১৯৭৮ সালের ১ জুলাই সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে প্রখম এর যাত্রা শুরু হয় এবং পরে ১৯৮৬ সালে এটি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের ৫০ গজ উত্তরে নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়।

ঢাকাসহ সারাদেশ থেকেই মানুষ হাসপাতালটিতে যান চিকিৎসা নিতে।

স্টাফ কোয়ার্টাসহ ৯ একর জমির উপর তৈরি এই হাসপাতালটিতে রয়েছে তিনটি ব্লক। হাসপাতালটিতে ব্লাড ব্যাংক, আইসিইউ, সিসিইউ, পিসিসিইউ, অপারেশন থিয়েটারসহ ৮টি সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে।

হৃদরোগের সব আধুনিক চিকিৎসা সেবা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স দিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে এই হাসপাতালে। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা অল্প খরচে করা হয় এবং ওষুধও সরবরাহ করে থাকে হাসপাতাল। জরুরি ও বহিঃবিভাগে রোগীদের ১৫ ও ১০ টাকার টিকিটে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

হাসপাতালের ৬০ শতাংশ বেড ফ্রি এবং ৪০ শতাংশ পেইং। মোট কেবিন সংখ্যা ৩০টি, যার ২টি ভিভিআইপি, ২টি ভিআইপি, ১৩টি এসি ও ১৩টি ননএসি। এসির ভাড়া ১১০০, ননএসি ৫৫০ ও কেবিনের ভাড়া ২৭৫ টাকা।

হাসপাতালটিতে ৩০৩ জন চিকিৎসক, ৯০৮ জন নার্স এবং ১৯০৪টি কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও সমসংখ্যক কর্মরত নেই বলে জানান ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুর রহমান।

হাসপাতালের ৫ নম্বও ওয়ার্ডে গিয়ে চোখে পড়ে সিটের দ্বিগুণ রোগীর ভিড়। ওয়ার্ডটিতে ৪৮টি সিটের বিপরীতে ১২৫ জন রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। ৬ নাম্বার ওয়ার্ডেও চোখে পড়ে একই চিত্র। বহিঃবিভাগেও রোগীর ভিড় চোখে পড়ার মতো। ৪১৪টি শয্যার বিপরীতে সেবা দিতে হয় এক হাজারেরও বেশি রোগীকে।

অপারেশন থিয়েটারে দেখা যায় সংস্কারের কাজ । জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, আপারেশনের রুম অনেক পুরোনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে গত মাসে। রোগীদের কোনো সংক্রমন যাতে না হয়, সেজন্য সাময়িকভাবে অপারেশন বন্ধ আছে। তবে দু’মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।

চিকিৎসার মান জানতে সাতক্ষীরা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রাজীব, মেহেরপুর থেকে আসা ছাবির খানসহ কয়েকজন রোগী ও তাদের অবিভাবকের সাথে কথা বললে তারা জানান, সেবার মান মোটামুটি ভালো। তবে সিট না পাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্চে।

কিছু রোগীর অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, সিট পেতে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়েছে।

হাসপাতালটিতে নয়টি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও একটি নতুন, বাকি সব পুরনো। আইসিইউ সন্নিবেশিত অ্যাম্বুলেন্সের আশু দরকার বলে মনে করেন রোগীর স্বজনরা।

১১০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে ৪১৪ শয্যায় উন্নীত হলেও শয্যা সংকুলানের কারণে দেশের  প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগীদের সিট দেওয়া সম্ভব হয় না বলে জানান প্রশাসনিক কর্মকর্তা (উন্নয়ন) মো. মাহমুদুজ্জামান।

তিনি বলেন, ভবনটির উর্ধমুখী (৫-৮ তলা) সম্প্রসারণের কাজ চলছে এবং ২০১৯ সালের মধ্যে কাজটি শেষ হলে সেবার মান উন্নয়ন হবে। এছাড়াও ২২ টি নতুন পদ সৃষ্টি প্রক্রিয়াধীন আছে।

মাহমুদুজ্জামান জানান, যেহেতু এটি একটি ইনস্টিটিউট তাই এখানে চিকিৎসার পাশাপাশি বিভিন্ন ট্রেনিং, ডিপ্লোমা ও পোস্ট গ্রাজুয়েশনও করানো হয়। পাশের দেশ নেপাল, ভুটান, ভারত থেকেও অনেকে আসেন এখানে হৃদরোগ নিয়ে পড়াশোনা করতে। এই কোর্সগুলো পরিচালিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।

বর্তমানে হাসপাতালটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ডা. মো. আফজালুর রহমান। তিনি ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

Exit mobile version