Site icon Health News

ঠাকুরগাঁওয়ের ৫ মৃত্যুর কারণ নিপা ভাইরাস

এক গ্রামে পাঁচজনের যে মৃত্যু আতঙ্ক ছড়িয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে, তার কারণ নিপা ভাইরাস বলে শনাক্ত হয়েছে।

ওই এলাকায় সরেজমিন তদন্ত চালানোর পর রোববার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) একথা জানিয়েছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেছে, “রোগের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, মৃত ব্যক্তিদের সকলের জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি ও মস্তিষ্কে ইনফেকশনের (এনসেফালাইটিস) উপসর্গ ছিল। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে হতে একজনের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয় এবং উক্ত নমুনায় নিপা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।”

গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়েকদিনে বালিয়াডাঙ্গীর মরিচপাড়া গ্রামে আবু তাহের (৫৫), তার জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫), স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫), দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসানের (২৭) মৃত্যু হলে দেখা দেয় আতঙ্ক।

অজ্ঞাত রোগের আতঙ্কে মৃতদের বাড়ি থেকে আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকায় জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন; দুটি স্কুলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালেই দেখা যায়। এটি ছড়ায় বাদুড় থেকে ছড়ায়। বাদুড়ের খেঁজুরের কাঁচা রস পান করার মাধ্যমে তা মানুষে আসতে পারে।

অজ্ঞাত রোগ হিসেবে ২০০১ সালে বাংলাদেশে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ নজরে আসে। তিন বছর পরে ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষার মাধ্যমে একে নিপা ভাইরাস বলে শনাক্ত করা হয়। ২০১৩ সালের দিকে নিপা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ছিল আক্রান্তের ৮৮ শতাংশ।

আইইডিসিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “উপরোক্ত আউটব্রেক ইনভেস্টিগেশনে প্রথম মৃত ব্যক্তির খেঁজুরের কাঁচা রস পান করার সুনির্দিষ্ট ইতিহাস না পাওয়া গেলেও অন্যান্য মৃত ব্যক্তিগণ প্রথম মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছিল বলে আইইডিসিআর ধারণা করছে।”

জীবিত সন্দেহাভাজন রোগীদের কারও রক্তে নিপা ভাইরাসের উপস্থিতি না পাওয়ার কথা জানিয়েছে আইইডিসিআর। তবে বলেছে, বিভিন্ন সময়ে মৃত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

নিপা ভাইরাস এড়াতে আইইডিসিআর খেঁজুরের কাঁচা রস পান না করার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের নিপা সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা (মাস্ক ও গ্লাভস পরে) আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবাদানের পরামর্শ দিয়েছে।

আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর হাত সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এ রকম রোগের ক্ষেত্রে রোগীদের সম্পূর্ণ পৃথক স্থানে রাখা ও পৃথক স্থানে সেবা দিতে হবে।

মৃতরোগীর লালা/রক্ত/মল/মূত্রের সরাসরি সংস্পর্শে অন্য কেউ যেন না আসে। মাস্ক ও গ্লাভস পরে মৃতদেহ গোসল করাতে হবে। গোসল করানোর পর সাবান দিয়ে গোসল করে নিতে হবে।

Exit mobile version