এশিয়ার দেশ যে চীনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল সবচেয়ে বেশি তা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। শুধু তাই নয় চীন দাবি করছে, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর সৃষ্ট পরিস্থিতি এখন বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এমন বাস্তবতার মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া উহান শহর সফর করেছেন। তার এই সফরের মধ্যে দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জিনপিংয়ের উহান সফরকালে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার সবচেয়ে কম মানুষ (১৯ জন) নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
তবে ইউরোপের দেশ ইতালি থেকে এসেছে ভিন্ন খবর। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়া ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩১ জনে। যেখানে একদিনে দেশটিতে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ১৬৮ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৪৯ জনে।
চীনের উহান থেকেই করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৫৪ জন ও মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ১৩৬।
ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার এটিই ছিল শহরটিতে চীনা প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর। সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন উহান ও হুবেই প্রদেশে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া মূলগতভাবে দমন করা গেছে।
বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, দ্রুত নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসাতে ধীরে ধীরে চীনের জীবন-যাপন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কিঙ্গাই প্রদেশে ১৪৪ টি সিনিয়র স্কুল ও সেকেন্ডারি ভোকেশনাল স্কুল সোমবার খুলে দেওয়া হয়েছে। চীনা সংবাদমাধ্যমে উহানের তিয়ানহি বিমানবন্দর চালু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তবে এটাই বাস্তব যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে।নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে অন্তত ১১৫ দেশে।
বুধবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার-এ দাঁড়িয়েছে।বিশ্বে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৪ হাজার ২০০ জনে। আবারো বলা হয়েছে, নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর ৯৯ শতাংশ ঘটনা এখন চীনের বাইরেই।
বিবিসি জানিয়েছে, ঘাতক এই ভাইরাস ছড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সব দেশে। যার মধ্যে ইতালিতে ৬ কোটি মানুষ অবরুদ্ধ এবং এক দিনেই ১৬৮ মৃত্যু।ইতালিতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি বোঝাই কারাগারগুলোতে দাঙ্গাও ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে নেওয়া নানা পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে হঠাৎ তৈরি হওয়া দাঙ্গায় মৃতের সংখ্যা ১২ জনে ঠেকেছে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন,শতাধিক দেশে ছড়িয়ে নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, এর মৃত্যু ঝুঁকি ততটা তীব্র নয়। আর মধ্যবয়সীদের চেয়ে বয়স্কদের মৃত্যুর হার ১০ গুণ বেশি। জানা গেছে, চীনে নয় বছরের কম বয়সী কারোই মৃত্যু ঘটেনি। শুধু তাই নয়, ত্রিশের নিচে বয়স এমন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা অনেক কম। কারণ দেখা গেছে, চীনে সাড়ে চার হাজার রোগীর মধ্যে এ বয়সী মারা গেছেন ৮ জন। একই অবস্থা ইউরোপেও, যেখানে বয়স্কদের মৃত্যু হার বেশি দেখা যাচ্ছে।