Site icon Health News

পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুর্ভোগ ঘুচবে কবে?

চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে খুলনার পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্রটির এই দুরবস্থা অবসান কবে ঘটবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখাও পাওয়া যাচ্ছে না।

এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ২১টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন।

বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের অভাবে হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে কয়েকটি স্থানে রাতে আলো জ্বলে না। ওয়ার্ডগুলোতে অধিকাংশ ফ্যান নষ্ট হয়ে আছে। জেনারেটরটিও বিকল তিন বছরের বেশি সময় ধরে। নষ্ট হয়ে আছে এক্স-রে মেশিনটিও।

এখানে নেই রোগীদের জন্য নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা। টয়লেটগুলোও দেখা যায় নোংরা।

অ্যানেসথেশিয়া চিকিৎসকের অভাবে এরই মধ্যে হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে গর্ভবতী মায়েদের ঝুঁকি নিয়ে যেতে হচ্ছে জেলা শহরে কিংবা স্থানীয় বেসরকারি ক্লিনিকে।

সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে চিকিৎসক না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা যায় পাইকগাছার গদাইপুর গ্রামের মনিরা খাতুন নামে এক নারীকে।

তিনি হেলথ নিউজকে বলেন, “এই হাসপাতালে কোনো মাইয়ে ডাক্তার নেই, এক-দুই ডো বিটা ডাক্তার আছে, তা’ তারে দেহাতি গেলি রাত হয়ে যাবেনে। খামাকা সময় নষ্ট না করে খুলনে (খুলনা) যাচ্ছি।”

হাসপাতালের ভর্তি রোগী রাঢ়ুলি গ্রামের মো. সেকেন্দার মিয়া হেলথ নিউজকে বলেন, “ডাক্তার তো সব সময় পাইনে। কোনো দিন একটার সময় আসে আবার কোনো দিন আসে না।”

চিকিৎসাধীন আরেক রোগীর স্বজন মনোয়ারা বেগম হেলথ নিউজকে বলেন, “ওয়ার্ডগুলোতে যেসব টয়লেট আছে, নোংরা-দুর্গন্ধে তা ব্যবহার করা যায় না। প্রায়োজনীয় পরিচ্ছন্নতাকর্মী না থাকায় এসব পরিষ্কার করা হয় না।”

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সুজন কুমার সরকার হেলথ নিউজের জিজ্ঞাসায় জানান, ২১ জন চিকিৎসকের স্থলে এখানে রয়েছে মাত্র ৬ জন। হাসপাতালের জেনারেল সার্জারি, ইএনটি, কার্ডিওলোজি, গাইনোকোলজি, চর্ম, শিশু কোনো বিভাগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ফলে রোগীদের প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়।

কিছুদিন আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে ডা. মুকুল কুমার মজুমদার যোগদান করেছেন। কিন্তু প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজ নিয়ে তাকে খুলনা, ঢাকা ও উপজেলার বিভিন্ন সভায়ই ব্যস্ত থাকতে হয়।

গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির পাইকগাছা উপজেলা সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন হেলথ নিউজকে বলেন, “প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকা ও সার্বিক অব্যবস্থাপনার কারণে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে এখন রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা চিকিৎসা নিতে এখন আর ওই হাসপাতালে যায় না।”

সমস্যা সমাধানের কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না- জানতে চাইলে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক হেলথ নিউজকে বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় ওখানে চিকিৎসকরা থাকতে চায় না। তবে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া নতুন নিয়োগের মাধ্যমে এখানে জনবল বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।”

Exit mobile version