Site icon Health News

পুঠিয়ায় রোগী সামলাতে চিকিৎসকের হিমশিম

রোগী আছে, আছে চিকিৎসকও। তবে রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা কম হওয়ায় চিকিৎসা সেবায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সরকারি নিয়ম অনুসারে ২৮ জন চিকিৎসক এবং ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে একজন করে চিকিৎসক থাকার নিয়ম।

কিন্তু কাগজ কলমে রয়েছে মাত্র ৩ জন মেডিকেল অফিসার এবং ৩ জন কনসালটেন্ট। এর মধ্যে একজন মেডিকেল অফিসার পাশের চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই দিন করে ডিউটি করেন, আর পুঠিয়াতে দুই দিন থাকেন।

এছাড়া ছয়জন চিকিৎসক রয়েছেন প্রেষণে নিয়োগ নিয়ে স্থানে, হাসপাতালে তাদের পাওয়া যায় না বলে স্থানীয়রা জানান। বাকি পদগুলো শূন্য।

গোটা উপজেলার ২ লাখ ৭ হাজার ৪৯০ জন রোগীর সেবা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ জন রোগীকে সেবা দিচ্ছেন হাতে গোনা কয়েকজনকে।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক হিসেবে শুধু ডা. কোহিনুর পারভীন রয়েছেন। তিনি একাই জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগের সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে ইউনিয়ান স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক না থাকায় তার কক্ষের সামনে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীরা লাইন দিয়ে রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পুঠিয়া গোপালহটি এলাকার হনুফা বেগম হেলথ নিউজকে বলেন, “আমার ছেলের বুক ও গলা ব্যথা করছে। হাসপাতালের আগেও একবার ছেলের এই রকম সমস্যা এসেছিলাম। কিন্তু শিশু ডাক্তার না থাকায় রাজশাহীতে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে।

“এত বড় হাসপাতাল, কিন্তু চিকিৎসক থাকে না, আমাদের জন্য এটা বড়ই কষ্টের বিষয়। আমরা গরিব মানুষ বাইরে নিতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। এখন নিজের কষ্ট হলেও নিজের সন্তানের কষ্ট দেখতে পারবো না। তাই বাইরে চিকিৎসা করাতে হবে।”

জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করে হেলথ নিউজকে বলেন, “প্রতিদিন এত রোগী হয় যে একার পক্ষে চিকিৎসাসেবা দিতে নিজেই মাঝে মাঝে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু কষ্ট হলেও এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইদুল হক হেলথ নিউজকে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যা চলছে। আমাদের ৬ জন বর্তমানে প্রেষণে রয়েছে। ১৩ জনের পদ খালি।

“এই সকল বিষয়গুলো আমি একাধিকবার উপজেলার মিটিংয়ে আলোচনা করেছি। বিভাগীয় সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।”

পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হেলথ নিউজকে বলেন, হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা এবং চিকিৎকদের সব বিষয়গুলো জেলা সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন সুজিত কুমার সাহা হেলথ নিউজকে বলেন, “রাজশাহীতে আমি যখন যোগদান করি, তখন অনেক ডাক্তাররা বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে। এরপর নতুনভাবে নিয়োগ না হওয়ায় এই সমস্যাগুলো থেকে গেছে। ডাক্তার সংকটের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।”

Exit mobile version