Site icon Health News

প্যালিয়েটিভ সেবা মিলবে নারায়ণগঞ্জে

নিরাময় অযোগ্য রোগীদের চিকিৎসা ও পরিচর্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্যালিয়েটিভ সেবা এবার মিলবে নারায়ণগঞ্জেও।

বুধবার ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড হসপিস অ্যান্ড প্যালিয়েটিভ কেয়ার এলায়েন্সের ডব্লিউএইচপিসিএ) সঙ্গে এ সমঝোতা স্মারক সই করে বিএসএমএমইউ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া এবং ডব্লিউএইচপিসিএ-এর নির্বাহী পরিচালক স্টিফেন কোন্নরের পক্ষে সংগঠনের গ্লোবাল এডভোকেসি ডিরেক্টর ক্লেয়ার মার্গারেট মরিস সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

বাংলাদেশের একমাত্র চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, “বাংলাদেশসহ বর্তমান বিশ্বে নিরাময় অযোগ্য রোগীদের জন্য প্যালিয়েটিভ সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি সেবা। বাংলাদেশেও এ সেবাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ধরনের রোগীদের প্রকৃতপক্ষে দেখার কেউ নেই। তাই প্যালিয়েটিভ সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”

বিএসএমএমইউ’র ডা. মিলন হলে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।

পেশায় চিকিৎসক আইভী বলেন, “সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া, ভবন নির্মাণসহ যত ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন তা করা হবে।”

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও সারাবিশ্বের প্যালিয়েটিভ সেবার নানাদিক তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নিজামউদ্দিন আহমদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর কোনো নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান নেই। ধারণা করা হয় যে, দেশে ১০ লক্ষ ক্যান্সার রোগী বাস করেন এবং প্রতি বৎসর ২ থেকে ৩ লক্ষ নতুন রোগী ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

“বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণের অভিমত যে এই সব রোগীর শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ নিরাময় অযোগ্য অবস্থায় চিকিৎসকদের কাছে আসেন। এই সব রোগীর জন্য আমাদের দেশে কোনো সংগঠিত চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা নেই।”

বাংলাদেশে বর্তমানে প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রয়োজন এমন ছয় লাখ মানুষ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২০১১ সালে পৃথিবীতে প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশী সংস্থা এই সেবার সাথে জড়িত। প্রয়োজনের তুলনায় এটি এখনো অত্যন্ত অপ্রতুল। আর বাংলাদেশে ধারণাটি মাত্র জন্ম লাভ করেছে।”

অধ্যাপক নিজামউদ্দিন বলেন, “প্যালিয়েটিভ কেয়ার কঠিন নিরাময় অযোগ্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের জীবনের মান বাড়ায়, মানসিক কষ্ট কমায়, অনর্থক চিকিৎসার বোঝা কমায় এবং বেশীদিন বাঁচতে সাহায্য করে।

সাধারণত ক্যান্সার, শেষ পর্যায়ের হার্ট, ফুসফুস, লিভার, কিডনি রোগ, স্মৃতিভ্রংশ, এইচআইভি/এইডস, এবং মটর নিউরণ ডিজিজ, সিজোফ্রেনিয়া ও শিশুদের ক্ষেত্রে জন্মগত হার্টের সড়বায়ুরোগ প্যালিয়েটিভ কেয়ারের আওতায় পড়ে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য  অধ্যাপক শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, ডব্লিউএইচপিসিএ-এর গ্লোবাল এডভোকেসি ডিরেক্টর ক্লেয়ার মার্গারেট মরিস বক্তব্য দেন।

Exit mobile version