Site icon Health News

প্রবাসে করোনোয় দেড়শতাধিক বাংলাদেশীর মৃত্যু

উন্নত জীবনের নিশ্চয়তাসহ নানা স্বপ্ন নিয়েই তারা পাড়ি জমিয়েছিলেন সুদুর আমেরিকায়। সবশেষ প্রযুক্তির চর্চাও সেখানে উপস্থিত। কিন্তু কিছুই সহায় হলো না তাদের। একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তারা। সংখ্যাটা এখন ১৫০ ছাড়িয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেলেন কমপক্ষে শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশী। এরমধ্যে ৯৫ জন মারা গেছেন শুধু নিউইর্য়কেই। তাদের মৃত্যু স্থানীয় প্রবাসী কমিউনিটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জানা গেছে, নিউইয়র্কের এলমাহার্স্টসহ বিভিন্ন হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন ২ শতাধিক বাংলাদেশি। নিউইয়র্কে বসবাসরত সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকী তার ফেসবুক পাতায় পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গেছেন দেড়শ’র বেশি প্রবাসী বাংলাদেশী।

প্রবাসীদের মৃত্যুর এ তালিকায় আরো নতুন ৮ জন যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে ঠেকেছে ২৩ জনে। এভাবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে নয় বিদেশের মাটিতে করোনা ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দেড়শ’র বেশি বাংলাদেশি। দেশে দেশে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় আড়াইশ বাংলাদেশী। মৃতের তালিকায় আছেন ইতালিতে ৩, কাতারে ৩, সৌদি আরবে ৩ জন, স্পেন, সুইডেন, লিবিয়ায় ও গাম্বিয়ায় ১ জন করে বাংলাদেশি। তবে সংখ্যাগুলো সব দেশের বেশি হবার কথা বলেছেন প্রবাসীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মৃত্যুর মিছিলে আরো অনেক বাংলাদেশীই থাকতে পারেন বলে স্থানীয় বাংলাদেশীরা ধারণা করছে। সবার নাম জানাটাও তাই সম্ভব হয়নি এখনো।

তবে নিউইয়র্ক এর স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ৫ এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স এবং ব্রুকলিনে আতাউর রহমান (৫৬),কামাল আহমেদ (৬৬), রাফায়েল (৪৫), বাবুল (৬০)  নামে ৪ বাংলাদেশির মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের স্বজনরাই দিয়েছেন এসব খবর। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত মৌলভীবাজার-১ এর সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম (৭৭) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের হাসপাতালে মারা গেছেন। বেশ কদিন এলমহার্স্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, একই দিন সন্ধ্যায় কুইন্স হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন তাহমিনা ইসলাম খান তমা (৩০)। এসব যুক্ত হয়ে করোনা ভাইরাসে  ১৪ মার্চ থেকে নিউইয়র্ক অঞ্চলে কমপক্ষে ৭৮ বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর এলো।

যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের মারা যাওয়ার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। সেখানে মারা গেছেন কমপক্ষে ২৩ বাংলাদেশি। এর মধ্যে ১৮ জনই লন্ডনে আর বাকিরা অন্যান্য অঞ্চলে।

কাতারে তিন প্রবাসী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। ইতালিতে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুর মিছিলে রয়েছেন ৩ বাংলাদেশিও। এছাড়া সৌদি আরব, কাতার, গাম্বিয়া ও লিবিয়ায় মারা গেছেন আরো ছয় বাংলাদেশী।

ইতালিতে ৪০, স্পেনে ৬৬, সিঙ্গাপুরে ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন।

এছাড়াও কানাডায় ২০, ফ্রান্স ও জার্মানীতে ২০ জনের মতো বাংলাদেশী আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে স্পেনে ৬ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন প্রবাসীরা। তবে এসব দেশের করোনা আক্রান্ত হবার পর অনেকেরই সুস্থ হবারও খবর রয়েছে।

Exit mobile version