Site icon Health News

বায়ুদূষণে বাড়ছে বিষণ্নতা

বায়ুদূষণের কারণে মানুষের শরীরে নানা রোগবালাই বাসা বাঁধছে, সবচেয়ে বেশি বাড়ছে মানুষের বিষণ্নতা।

বাড়ছে রাগ-ক্ষোভ। সব মিলিয়ে বায়ুদূষণের কারণে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে বলে জানালেন বিজ্ঞানীরা।

যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ ও ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের পাঁচ বিজ্ঞানীর করা গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ দূষিত বায়ুর সংস্পর্শে আসে, তাদের মধ্যে ১০ শতাংশ বেশি মানুষ বিষণ্নতায় ভোগে। আর এসব মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। আমাদের দেশেও বিভিন্ন স্বাস্থ্য জরিপ ও গবেষণায় প্রায় একই ধরনের তথ্য পাওয়ার কথা জানালেন গবেষকেরা।

‘বায়ুদূষণের সঙ্গে বিষণ্নতা, রাগ, উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ ও আত্মহত্যার সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই গবেষণায় বিশ্বের ১৬টি দেশের বায়ুদূষণ–সংক্রান্ত তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ১৯৭৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষ দূষিত বায়ুর দেশগুলোতে করা এ–সংক্রান্ত ১ হাজার ৮২৬টি গবেষণা ও গবেষণাপত্রও মূল্যায়ন করা হয়েছে। তাতে সামগ্রিকভাবে ওই দেশগুলোর ১৫ থেকে ৩৯ বছর বয়সী মানুষের মনের ওই অবস্থা উঠে এসেছে।

১২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশ করে।

গবেষণা প্রতিবেদনটি নিয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও বায়ুদূষণবিষয়ক গবেষক আবদুস সালামের সঙ্গে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই গবেষণার ফলাফল বাংলাদেশের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক। কারণ, কোনো শহরের বায়ুদূষণ যে মাত্রায় থাকলে বিষণ্নতা ও আত্মহত্যা বাড়ে, বাংলাদেশে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ প্রধান বড় শহরগুলোতে সে ধরনের দূষিত বায়ু রয়েছে।

গবেষণাটিতে বিশ্বের যে ১৬টি দেশের চিত্র উঠে এসেছে, তার মধ্যে অবশ্য বাংলাদেশ নেই। তবে বাংলাদেশের মতো বায়ুদূষণ রয়েছে যেসব দেশে, তার মধ্যে ভারত ও চীনের অবস্থা ওই গবেষণাতে উঠে এসেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, বায়ুতে দূষিত ভারী বস্তুকণা পিএম ২.৫ সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে ভারতের দিল্লিতে। সেখানে প্রতি কিউবিক মিটার বাতাসে ভারী বস্তুকণার পরিমাণ পাওয়া গেছে ১১৪ মাইক্রোগ্রাম। ঢাকায় এর পরিমাণ ১০০ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ, ঢাকা ও দিল্লির বাতাসের দূষণের অবস্থা প্রায় কাছাকাছি।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৮-১৯ অনুযায়ী, দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সী মানুষের ১৭ শতাংশ কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত। এসব ব্যক্তির ৯২ শতাংশ চিকিৎসা নেন না। ৭ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৪ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আছে। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা থাকা এসব কিশোর-কিশোরীর ৯৫ শতাংশ কোনো চিকিৎসা নেয় না।

Exit mobile version