Site icon Health News

মাতৃদুগ্ধ পানে উৎসাহিত করতে নতুন নীতিমালা

মাতৃদুগ্ধ পানের বিষয়টিতে সমর্থন বাড়াতে নতুন একটি নীতিমালা গ্রহণ করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ। জেনেভায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে গৃহীত এ নীতিমালায় নতুন ১০টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

একটা শিশুর সারাজীবনের সুস্থতার জন্য বুকের দুধ খাওয়া খুবই জরুরি। আর এতে পরিবার ও সরকারের ব্যয়ও কমে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, জন্মের প্রথম ঘণ্টার মধ্যে বুকের দুধ খাওয়ালে শিশুদের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা, এমনকি জীবন বাঁচানোও সম্ভব। শিশুদের বুদ্ধিমত্তাও বাড়ায় এটি।

শিশুকে পুরোপুরি বুকের দুধ না খাওয়ালে বা একদমই না খাওয়ালে ডায়রিয়া ও অন্যান্য সংক্রামক রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে কমে মায়েদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা এইচ ফোর বলেন, “মাতৃদুগ্ধপান শিশুর জীবন বাঁচায়। এটা ছোট অবস্থায় শিশুর স্বাস্থের জন্য যেমন জরুরি, বড় হলেও এর সুফল পাওয়া যায়।

“কিন্তু একজন মা যাতে সন্তানকে দুধ খাওয়াতে পারেন, সেজন্য সমর্থন, উৎসাহ ও নির্দেশনা দরকার। এ ১০টি পদক্ষেপ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে সারা বিশ্বেই মাতৃদুগ্ধ পানের বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন ও একজন শিশুকে সবচেয়ে সুন্দরভাবে জীবন শুরু সুযোগ করে দিতে পারি আমরা।”

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেডরোস ঘিব্রিইয়েসাস বলেন, সারাবিশ্বের হাসপাতালগুলোতে মায়েরা তাদের শিশুদেরকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সুযোগ পান না কি পান না, তার উপর নির্ভর করে জীবন ও মৃত্যুর মধ্যকার পার্থক্য।

তিনি বলেন, “হাসপাতালের কাজ কেবল অসুখ সারানো নয়। লোকজন যাতে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে, তা নিশ্চিত করার তাদের দায়িত্ব। প্রত্যেক দেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো বিষয়ক ১০টি পদক্ষেপ কার্যকর করার বিকল্প নেই।”

মাতৃদুগ্ধ পানে সহায়তা করতে বিভিন্ন দেশে যেসব ব্যবহারিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ, তা নতুন এ নীতিমালায় বর্ণনা করা হয়েছে।

শিশুর জন্মের প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো এবং ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুই মায়ের দুধ খাওয়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এতে।

মাতৃদুগ্ধ পান বিষয়ে হাসপাতালগুলোতে কর্মীদের দক্ষতা, বুকের দুধ পানে মায়েদেরকে সমর্থনসহ শিশুর জন্মের আগে ও জন্ম পরবর্তী সেবা কেমন হবে তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এ নীতিমালায়।

পাশাপাশি বুকের দুধের বিকল্পের ব্যবহার সীমিতকরণ, শিশুকে খাওয়ানোর বিষয়ে সতর্কতা, বোতল ব্যবহারের বিষয়ে শিশুর বাবা-মাকে শিক্ষা দেওয়া এবং হাসপাতাল থেকে মা ও শিশুকে রিলিজ দেওয়ার সময় সমর্থনের কথাও বলা হয়েছে এতে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের হিসেব মতে, দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৮ লাখ ২০ হাজার শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব।

Exit mobile version