Site icon Health News

রাজশাহীতে বেসরকারি চিকিৎসা সেবায় দুর্ভোগ

রাজশাহীতে ব্যাঙের ছাতার মতো ক্লিনিক-হাসপাতাল গড়ে উঠলেও চিকিৎসা সেবা নিয়ে রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

অভিযোগ এসেছে, চিকিৎসকের কাছে গেলে অপ্রয়োজনেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়। চেম্বারে চিকিৎসকদের দেখাতে সিরিয়াল দিতে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার ভোগান্তির পাশাপাশি দালালদের দিতে হয় টাকা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজশাহীতে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত ১০০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর বাইরেও রয়েছে নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত অসংখ্য ক্লিনিক।

তবে সুপরিচিত কিংবা নামকরা চিকিৎসকরা যেসব ক্লিনিকগুলোতে বসেন, সেখানে সিরিয়াল পেতে ভোগান্তি বেশি বলে রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ।

বেশিরভাগ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকরা রোগী দেখেন বিকালের দিকে। কিন্তু সিরিয়াল দিতে হয় ভোরের দিকে।

কুষ্টিয়ার দৌলতদিয়া থেকে মেহেদি হাসান নামে একজন তার মায়ের মস্তিষ্কজনিত সমস্যার জন্য আসেন রাজশাহীতে। সিরিয়াল দিতে হবে বলে মাকে নিয়ে একদিন আগেই রাজশাহীতে পৌঁছাতে হয়েছে তাকে। মেহেদি ভোর থেকে অসুস্থ মাকে নিয়ে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপেক্ষা করছিলেন। কারণ চিকিৎসক কফিল উদ্দিনের সিরিয়াল পেতে স্বয়ং রোগীকে উপস্থিত হতে হয়।

বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সিরিয়াল পেতে এই ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের।

কী কারণে এই ভোগান্তি- খুঁজতে গিয়ে ক্লিনিকগুলোর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আগে সিরিয়াল দেওয়ার পরও অনেক রোগী আসত না, সেটা যাতে না ঘটে সেইজন্য এই পদ্ধতি। এখন সিরিয়াল দেওয়ার সময়ই রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেওয়া হয়।

নওগাঁর আত্রাই থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন শাওন আহমেদ। তার দুই বছরের বাচ্চা এখনও কথা বলতে শিখেনি। গেলেন শিশু বিশেষজ্ঞ বেলাল আহমেদের কাছে।

তিনি পুরো কথা না শুনেই এক গাদা টেস্ট লিখে দিলেন বলে শাওনের অভিযোগ। তার ভাষ্য, শিশুটির সমস্যা কী, কত গভীর, কীভাবে ভালো হবে, তার কিছুই জানলেন না চিকিৎসক।

প্রায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীদের অভিযোগ, তারা রোগীর রোগের ধরন ও বর্ণনা ভালোমতো না শুনেই একগাদা টেস্ট লিখে দেন। এতে গরিব ও মধ্যবিত্ত রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয় বেশি।

অথচ মেডিকেল বোর্ডের নির্দেশনায় রয়েছে, রোগের প্রকৃতি ও রোগীকে বুঝতে একজন চিকিৎসকের কমপক্ষে ৩৫ মিনিট সময় দেওয়া উচিত। সেখানে মাত্র দুই মিনিটে একজন রোগীকে কীভাবে দেখা সম্ভব? এছাড়া রোগীর কাছ থেকে উচ্চহারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ক্লিনিকদের বিরুদ্ধে।

তবে এসব বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে বারবার ফোন দেওয়া হলেও ফোন ধরেননি রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. সনজিত কুমার সাহা।

Exit mobile version