শৈশবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হলে পরবর্তীতে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যে অবসাদ, উদ্বেগ ও আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যায়, তা আর অজানা নয়। কেন তা হয়, সে পথ দেখিয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা, এতে বলা হয়েছে, শৈশবের এ ধরনের ঘটনা ব্যক্তির মস্তিষ্কে ফেলে নেতিবাচক প্রভাব।
চিলড্রেন্স ব্যুরো অব ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসের হিসেব অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সালে দেশটিতে শিশু নির্যাতনের হার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
নির্যাতনের বিষয়টি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে তা পর্যালোচনা করেন ডগলাস মেন্টাল হেলথ ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের ম্যাকগিল গ্রুপ ফর সোস্যাল স্টাডিজ ও ম্যাকগ্রিল ইউনিভার্সিটি অব মনট্রিলের একদল গবেষক। গবেষণার ফলাফলটি প্রকাশিত হয়েছে দ্য আমেরিকান জার্নাল অব সাইকিয়াট্রিতে।
ড. পিয়েরে-এরিক লুটজ ও তার সহকর্মীদের পরিচালিত এ গবেষণায় বলা হয়, যেসব প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি শৈশবে বড় ধরনের নির্যাতনের শিকার হন তাদের মস্তিষ্কের আবেগ, মনোযোগ ও অন্যান শিক্ষণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত অংশটির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
ডগলাস বেল কানাডা ব্রেন ব্যাংকে সংরক্ষিত ৭৮ জন আত্মহত্যাকারীর মস্তিষ্কের নমুনা সংগ্রহ করা হয় গবেষণার জন্য। এদের মধ্যে ২৭ জন ছোটবেলায় নির্যাতন ও পরবর্তীতে অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। ২৫ জন ব্যক্তি ছিলেন অবসাদগ্রস্ত কিন্তু শৈশবে কোনো নির্যাতনের শিকার হননি। বাকি ২৬ জনের কোনো ধরনের মানসিক সমস্যা ছিল না বা শৈশবে নির্যাতনের কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
তিনটি গ্রুপের ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের টিস্যু পর্যালোচনা কর গবেষকরা জানান, জীবনের শুরুতে নির্যাতনের শিকার হলে দীর্ঘমেয়াদে তার প্রভাব পড়তে পারে মস্তিষ্কের শিক্ষণ ও আবেগীয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অংশের সঙ্গে।
তবে এ বিষয়ে আরো গবেষণা করা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে