Site icon Health News

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিস্ময়কর সাফল্য

আর মাত্র তিন মাস বাঁচতে পারেন- চিকিৎসকরা এটা বলে দেওয়ার পর আশা হারিয়ে মৃত্যুর দিনই গুণতে শুরু করেছিলেন ক্যান্সারাক্রান্ত জুডি পারকিন্স। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে দুই বছর হয়ে গেছে, জুডি এখনও বেঁচে। শুধু তাই নয়, তিনি এখন ক্যান্সার থেকে মুক্ত।

যে চিকিৎসায় দুরারোগ্য ব্যাধিটি থেকে জুডি মুক্তি পেলেন, তাকে বিস্ময়কর বলছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, জুডির স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় যে সাফল্য পাওয়া গেছে, তা অন্য ক্যান্সার নিরাময়েও ঘটতে পারে।

৪৯ বছর বয়সী জুডির স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় তার দেহে ৯ হাজার কোটি ক্যান্সার প্রতিরোধী কোষ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আর তাতেই মিলেছে অভূতপূর্ব সাফল্য।

ফ্লোরিডার স্তন ক্যান্সারাক্রান্ত জুডির চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের গবেষকদের এই চিকিৎসা পদ্ধতির খবর সোমবার এসেছে বিবিসিতে।

জুডির স্তনে ক্যান্সার এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে প্রচলিত অন্য চিকিৎসায় তা আরোগ্যের কোনো সম্ভাবনা দেখছিলেন না চিকিৎসকরা। তার দেহে টেনিস বল আকৃতির একটি টিউমার ক্যান্সার সেলে রূপ নিয়েছিল।

এরপর চিকিৎসকরা নতুন পদ্ধতি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেন; তবে জুডিকে বলেছিলেন, তিনি এতে হয়ত সেরেও উঠতে পারেন।

জুডি বলেন, “থেরাপি শুরু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আমি টের পাচ্ছিলাম, আমার শরীরের ভেতরে কিছু একটা ঘটছে। দুই সপ্তাহ পর মনে হল, টিউমারটি নেই।”

পাঁচ সপ্তাহের চিকিৎসার পর যখন স্ক্যান করে ক্যান্সার কোষ আর নেই বলে জানা গেল, তখন আনন্দে যেন শূন্যে ভাসছিলেন জুডি। নতুন জীবন পেয়ে এই নারী এখন সাগরে ছোট নৌকা ভাসাতেও ভয় পাচ্ছেন না।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জুডির স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় তার দেহে ‘জীবন্ত ওষুধ’ প্রয়োগ করা হয়, যা তৈরি হয়েছে তারই দেহকোষ থেকে।

এই চিকিৎসাকে যুগান্তকারী বললেও চিকিৎসক দলের প্রধান স্টিভেন রোসেনবার্গ বলেন, এটি এখনও পরীক্ষামূলক, আরও গবেষণা প্রয়োজন।

তবে তিনি বলেন, “আমরা কেবল জেনেছি, এটা কীভাবে কাজ করে। হতে পারে যে কোনো ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কাজ করতে পারে।”

তবে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার নাও’ এর পরিচালক ডা. সিমন ভিনসেন্ট এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “এটা বিস্ময়কর একটি সাফল্য বলে আমি মনে করি।”

একজন রোগীর ক্ষেত্রে এই সাফল্য অনেকের রোগমুক্তির পথ খুলে দেবে বলে আশা করছেন ডা. ভিনসেন্ট

Exit mobile version