Site icon Health News

বিশ্বে আক্রান্ত ১৬ লাখ ছাড়াল, মৃত্যু লাখ ছুঁই ছুঁই

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তার গতি কমাইনি। বরং খুব দ্রুতই তা পার হয়ে এখন ১৫ লাখ ৪৩ হাজারের ঘরে।

যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা মিটার বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় বলছে, পৃথিবীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মৃত মানুষের সংখ্যা এখন ৯৫ হাজার ৭৯৪ জনে নিয়ে গেছে। একটু তাকিয়ে থাকলেই আক্রান্ত ২শ ৬ টি দেশ ও অঞ্চলের কোনো না কোনো জায়গা থেকে এসে সংখ্যা আবার বাড়িয়ে তুলছে।

আক্রান্ত ও মৃত্যুর কাটা অনবরত ঘুরছেই। অবশ্য করোনা মিটার বলছে, এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ লাখ ৫৭ হাজারের বেশি।

বিশ্বের সবদেশকে ছাপিয়ে আক্রান্তের তালিকায় এখন সবার ওপরে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এ মুহুর্তে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্ত ৪ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পরাক্রমশালী এ দেশটি কমপক্ষে ১৬ হাজার ৬৯১ জনের মৃত্যু ঠেকাতে পারেনি। এরমধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশী আছেন কমপক্ষে ১শ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ১৯০০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে করোনামিটার। এরফলে মৃত্যুর তালিকায় স্পেনকে ডিঙ্গিয়ে ২য় স্থানে চলে গেছে এ পরাক্রমশালী। সবার উপরের নামটি অবশ্য এখনো ইতালী।

অন্যদিকে ৭ হাজার ৯শ জনের বেশি মৃত্যুর তালিকা যুক্তরাজ্যর প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও এখন চলে গেছেন অক্সিজেন সাপোর্টে। লক্ষণ না কমে ঝুঁকি বাড়ায় সোমবার তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ফলে করোনা ভাইরাস কতটা করুনাহীন তা কফিনের লম্বা সারি বেঁধে টের পাচ্ছে ইউরোপও। তবে আগের চেয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা একটু কমেছে। প্রাচীন সভ্যতার ধারক এ মহাদেশের ইতালিতে মারা গেছে সবচেয়ে বেশি মোট ১৮ হাজার ২৭৯। তবে গত এক সপ্তাহের তুলনায় বেশ খানিকটা কমেছে মৃতের হার।

৩য় অবস্থানে রয়েছে স্পেন যার মৃত মানুষের সংখ্যা বৃহস্পতিবার ১৫ হাজার ৪৪৪ জনে। এছাড়া ফ্রান্সে ১২ হাজার ২১০ ও ইরানে ৪ হাজার ১১০ জন মারা গেছেন। ইউরোপের দেশ জার্মানীতে ২ হাজার ৬০৭ ও সুইজারল্যান্ডে ৯৪৮ জন মারা গেছেন।

এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৮ তে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৪৯ জনের দেহে করোনভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আক্রান্ত বাড়ছে এশিয়ার দেশ জাপান ও পাকিস্তানেও। জাপানে ৪২৫৭ আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ৯৩ জন। পাকিস্তানে ৪ হাজার ১৯৬ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৬০ জন। 

এদিকে, সবশেষ হিসেবে করোনাভাইরাসে গত ২৩ যুক্তরাষ্ট্রের ৯৩ জনসহ সারাবিশ্বে শতাধিক বাংলাদেশী মারা গেছেন।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সর্বশেষ এক ভাষণে এর ভয়াবহতা স্বীকার করে বলেছেন, তারপরও সামনে দিকে দিকে সুড়ঙ্গের শেষ মাথায় আলো দেখতে পাচ্ছেন।আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা জারি করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যর শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক ও গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, আগামী সপ্তাহে মৃত্যুর রেকর্ড সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠে যেতে পারে। তারা মনে করেন, করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

ফলে সব হিসেব, সব আন্দাজ, সব আহবান উপেক্ষা করেই দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এবং কদিন আগের চেয়ে অবিশ্বাস্য ও দ্রুতগতিতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আবারো বলেছে, করোনা থেকে বাঁচতে সহজ কোনো পথ খোলা নেই।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২০৬টি দেশ ও অঞ্চলে আক্রান্ত হয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক চীনের বাইরে করোনা ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ১১ মার্চ পৃথিবীব্যাপী মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

Exit mobile version