ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য বিশেষ একটি তহবিল গঠনের দাবি এসেছে এক অনুষ্ঠান থেকে।
শিশু ক্যান্সার সচেতনতা মাস উপলক্ষে রোববার এক অনুষ্ঠানে এই দাবি করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম নাসিরুদ্দিন।
তিনি বলেন, ক্যান্সারাক্রান্ত সন্তানের বাবা-মা নিঃস্ব হয়ে যান, অনেকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতেও পারেন না। তাই এসব শিশুদের জন্য একটি বিশেষ তহবিল দরকার।
“সরকারিভাবে যদি এসব ক্যান্সারাক্রান্ত শিশুদের জন্য একটি স্পেশাল ফান্ড দেওয়া হয়, তাহলে আমরা তাদের আরও বেশি সাপোর্ট দিতে পারি।”
ডা. নাসিরুদ্দিন বলেন, “শিশুদের ক্যান্সারাক্রান্ত হওয়া অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। যে বাবা-মা জানতে পারেন তার সন্তানের এরকম একটা অসুখ হয়েছে, সেই পরিবার কীসের ভেতর দিয়ে যায়, সেটা কেবল তারাই বুঝতে পারে আর কিছুটা পারি আমরা চিকিৎসকরা।
“অনেক বাবা-মা নিঃস্ব হয়ে যান, অনেকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতেও পারেন না। ব্যয়বহুল ওষুধগুলো দিতে পারি না, তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও দিতে পারি না। তবুও আশ্বস্ত করতে চাই, আপনাদেরকে যেন উন্নত পরিবেশে চিকিৎসা দিতে পারি সে বিষয়ে সচেতন থাকব।”
অনুষ্ঠানটি আয়োজক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ খসরু বলেন, “একজন ক্যান্সারাক্রান্ত শিশুর জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হয়, এর কিছুটা হয়ত আমরা দিতে পারি। কিন্তু বেশিরভাগই দিতে হয় পরিবারকে, যা বহন করতে গিয়ে পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে যায়।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এই বিভাগে থোক বরাদ্দ বা অনুদান দেওয়া সম্ভব হয়, তাহলে আরও ভালো সেবা দেওয়া যাবে।”
অধ্যাপক মোরশেদ বলেন, শিশুক্যান্সার নিরাময়যোগ্য। যদি সচেতনতা থাকে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা হয় তাহলে শিশু ক্যান্সার ভালো হয়।
সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা যে সীমিত সম্পদের মধ্যে থেকে, যে সমস্যার মধ্যে দেশের মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, তাতে বাঙালি জাতির চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকা দরকার।
শিশুদের জন্য এবং ক্যান্সারাক্রান্ত শিশুদের জন্য স্পেশালাইজড হাসপাতাল হওয়া দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শফিকুল আলম চৌধুরী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সাহনূর ইসলাম, ইফফাত আরা শামসাদ প্রমুখ।