ভারত থেকে একটি ট্রাকে করে ৬২ হাজার ডিম দেশে আসার পরেই ঢাকার বাজারে পাইকারিতে প্রতিটির দাম ৮০ পয়সা করে কমে গেছে। আমদানির পর কমেছে আলুর দামও। ১০ টাকা কমে এখন খুচরায় দাম কেজিতে ৫০ টাকা।
রোববার সন্ধ্যায় যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ট্রাক ঢোকার পর রাতে কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকানগুলোতে ১০ টাকা ২০ পয়সা হারে ডিম বিক্রি হয়েছে। আগের দিন দাম ছিল ১১ টাকা করে।
এলাকার মুদি দোকানে খুচরা পর্যায়ে কোথাও ৫০ টাকা হালি, কোথাও ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সুপার শপগুলোতেও দাম কমে আসছে। তবে যাদের হাতে বেশি পরিমাণে ডিম আছে, তারা এখন লোকসানের আশঙ্কায়।
মিরপুরের ডিমের আড়ৎদার লোকমান বলেন, “আমার কাছে এখন কয়েক হাজার ডিম আছে। আজ সারাদিনে যত দ্রুত সম্ভব আমি ডিম বিক্রি করার চেষ্টা করেছি। কারণ, কালকে আর কেনা দামেও ডিম বিক্রি করা যাবে না।”
বাজার নিয়ন্ত্রণহারা হয়ে যাওয়ার পর সরকার গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫টি কোম্পানিকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদনপত্র দেওয়া শুরু করে। তবে নানা জটিলতায় প্রথম চালান আসতে সময় লাগে ৪৯ দিন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর এক কোটি ডিম আনার অনুমোদন পাওয়া বিডিএস করপোরেশন নিয়ে আসে এক ট্রাক ডিম। বন্দর পর্যন্ত তাদের প্রতিটি ডিমের আমদানি খরচ পড়েছে ৫ টাকা ২৯ পয়সা। প্রতিটি ডিমের জন্য শুল্ক গুনতে হয়েছে ১ টাকা ৮০ পয়সা। ফলে বন্দর পার হওয়ার পর ডিমের দাম দাঁড়াচ্ছে প্রতিটি ৭ টাকা ০৯ পয়সা।
বিডিএস করপোরেশনের মালিক দিপংকর সরকার বলেন, আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে আরও ১০ লাখ ডিম বাজারে আসছে।
ট্রাকে করে খোলাবাজারে ডিম বিক্রি করা বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, “আজকে আমরা ৮০ হাজার ডিম বিক্রি করেছি। লাল ডিম প্রতি ডজন ১৩৮ টাকায় আর সাদা ডিম ১৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।”
ডিমের দাম লাগামহীন হয়ে যাওয়ার পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর সরকার প্রতিটির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা বেঁধে দেয়। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে দাম ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়।
এরপর সরকার আমদানির অনুমোদন দিতে শুরু করলে দাম কমে আসতে থাকে। তবে নানা জটিলতায় আমদানিতে বিলম্ব হতে থাকলে দাম আবার চড়তে থাকে।
আলুর দাম কমল
আলুর বাজারদর নিয়ন্ত্রণেও সরকার আমদানিতেই ভর করেছে। গত ৩০ অক্টোবর কৃষি মন্ত্রণালয় অনুমোদনপত্র দিতে শুরু করে। মোট এক লাখ ৬২ হাজার টন আলু আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সোমবার পর্যন্ত দেশে এসেছে ২ হাজার ৭০০ টন। আমদানির আগে কোথাও ৬০ টাকা, কোথাও ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে থাকা রান্নার উপকরণটি এখন খুচরা পর্যায়ে নেমে এসেছে ৫০ এর ঘরে।এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম কমেছে ১০ টাকা।