Site icon Health News

ডেঙ্গু ছড়ানোর ঝুঁকি মোকাবেলায় চলছে ‘প্রস্তুতি’

কোরবানির ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ভ্রমণের মধ্য দিয়ে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর আরও ছড়াতে পারে বলে উদ্বেগে রয়েছে সরকার।

সম্ভাব্য এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে তা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশজুড়ে চিকিৎসকদের ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার সর্বসাম্প্রতিক কৌশলসহ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমরা জানি, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। কারণ, মানুষ গ্রামে যাবে। আমরা তাদের বাড়ি যাওয়া বাদ দিতে বলতে পারি না। আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

ডেঙ্গু জ্বরের জীবানু এডিস এজিপ্টি প্রধান বাহক মশা প্রধানত শহরে পাওয়া যায়। তবে মানুষের ভ্রমণের কারণে বাংলাদেশজুড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব জিনিস কেন্দ্রের অনুমোদন ছাড়া কেনার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোর বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের সকলের ছুটি বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জেলা হাসপাতালের জন্য ১০ লাখ ও উপজেলার জন্য ২ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট ২৭ হাজার ৪৩৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কেবল শনিবারই হাসপাতালে গেছেন ২০৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যদিও গণমাধ্যমের খবরে মৃত্যুর সংখ্যা নব্বই ছাড়িয়েছে।

ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কীটতত্ত্ববিদ বি এন নাগপাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, ফগার মেশিনে রাস্তা বা উন্মুক্ত জায়গায় কীটনাশক ছিটিয়ে ডেঙ্গু রোগের বাহক এইডিস মশা মারার আশা কেবলই ‘মিথ’।

“তার বদলে নিজের ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং সকাল-সন্ধ্যা অ্যারোসল স্প্রে করুন, কারণ এইডিস মশা ওখানেই থাকে।”

মশা নিয়ে গবেষণায় ৪০ বছর কাটিয়ে দেওয়া বিএন নাগপাল এইডিস মশা মারতে ফগিং মেশিনের প্রয়োগ পদ্ধতি নাচক করে দিয়ে বলেন, সবার আগে এ মশার প্রজননস্থল শনাক্ত ও ধ্বংস করার দিকে নজর দিতে হবে।

একটি পানির বোতলের ঢাকনা দেখিয়ে তিনি বলেন, মাত্র দুই মিলিলিটার পানি পেলেও এইডিস মশা সেখানে বংশ বিস্তার করতে পারে।

“এডিস মশা পানির উপরিতলে এমনভাবে ডিম ছাড়ে, যাতে সেগুলো বছরজুড়ে টিকে থাকতে পারে। যখন পাত্র ভরে পানি উপচে পড়ে, তখন সেই ডিম থেকে লার্ভা জন্ম নেয়।”

Exit mobile version