বাংলাদেশের ১৯৬৪ সালে প্রথম ঢাকায় সংক্রমণ ঘটায় ডেঙ্গু। ২০২২ সালে ৬১ হাজার রোগীর মধ্যে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। ওই বছর দেশে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। গত ২২ বছরে দেশে আড়াই লাখের বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে মারা গেছে ৮৫০ রোগী।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ইসিডিসি বলছে, যেসব দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি সেসব দেশে রোগীর অনুপাতে মৃত্যু বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম।
তারা জানিয়েছে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, বলিভিয়া, পেরু ও আর্জেন্টিনায় সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে। এরপর মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, আফগানিস্তান, লাওস, কম্বোডিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভানুয়াতু, মালদ্বীপসহ শতাধিক দেশে। তবে আক্রান্ত রোগীদের অনুপাতে মৃত্যুর হার বাংলাদেশে বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগে প্রতি বছর ৪০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সংস্থাটি বলছে, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষ এখন ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ডেঙ্গুর জন্য নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণ ও উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা রোগীকে সুস্থ করে তোলে এবং মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গুকে রোগতত্ত্বের গুরুত্ব দেয় সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য থেকে জানা যায়।
দেশে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় ডেঙ্গু রোগীদের জন্য শয্যা বাড়ানো হচ্ছে, জরুরি চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও ওষুধও পর্যাপ্ত। যেসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক ও নার্সের সংকট রয়েছে, সেসব স্থানে লোকবল পদায়ন করা হয়েছে।
সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রচার-প্রচারণার কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেরিতে হাসপাতালে এলে ঝুঁকি বেশি হচ্ছে। ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব অভিযোগ দেয়া হচ্ছে তা সঠিক নয়।