Site icon Health News

দাম্পত্যে যৌনতায় নিরাসক্তির কারণ এই?

দম্পতিদের যৌনতায় নিরাসক্তি নিয়ে সারাবিশ্বেই এখন আলোচনা, আর তার কারণ হিসেবে স্মার্টফোনকে দায়ী করছেন গবেষকরা।

চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ যৌনতা সম্পর্কের ভিতকেই কেবল মজবুতই করে না; মানসিক অবসাদ দূর, প্রাণশক্তি বাড়াতেও রাখে ভূমিকা।

কিন্তু সাম্প্রতিক বিশ্বে দম্পতিদের যৌনতায় নিরাসক্তি দেখে যুক্তরাষ্ট্রে এক জরিপ চালিয়ে স্মার্টফোনকে এর কারণ হিসেবে খুঁজে পাওয়া গেছে।  

জরিপের দেখা যায়, স্মার্টফোনে সোশাল মিডিয়ার মোহে সঙ্গীর দিকে মন দেওয়ার সময়ই থাকছে না কারও। এটা নানা সামাজিক ও সাংসারিক জটিলতাও তৈরি করছে।

প্রায় ২ হাজার দম্পতির চালানো এই জরিপে দেখা গেছে, প্রায় তিন-চতুর্থাংশই একান্ত নিজস্ব সময়েও যৌনতার চেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন মোবাইল ফোনে। শুধু তা-ই নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষ অধিকাংশের দাবি, ঘুমোতে যাওয়ার আগে জীবনসঙ্গীর মুখ নয়, মোবাইল দেখেই চোখ বোজেন তারা। এমনকি, কারও কারও একই বাড়িতে থেকেও পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠছে স্মার্টফোনটি।

জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৫৫ শতাংশের মত, কেবল যৌনজীবনই নয়, অত্যধিক ফোন ব্যবহারের কারণেই নিজেদের জীবনসঙ্গীর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কও ব্যাহত হচ্ছে। ৩৫ শতাংশ জানাচ্ছে, মোবাইল আসক্তির কারণে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক নেই বহু দিন ধরেই।

কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার যুক্তরাষ্ট্রের এই জরিপের তথ্য তুলে ধরে ভারতের ক্ষেত্রে একই প্রবণতার চিত্র তুলে ধরেছে।

 ভারতের মনোবিদ জয়রঞ্জন রামের মতে, ‘‘কেবল মার্কিন মুলুকে নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময় নানা দেশেই এই ধরনের সমীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে, এবং তাতে এমনই সব ফলাফল বেরিয়ে এসেছে, যা সমাজ ও সংসার জীবন দু’ক্ষেত্রেই বেশ বিপদের।”

মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকতে পারার যে ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে, তা ভবিষ্যতে সমাজকে আরও বড় বিপদের দিকে নিয়ে যাবে বলে এই মনোবিদের আশঙ্কা।

মনস্তত্ত্ববিদ ঈশাণী শর্মা বলেন, “আজকাল মানুষ নিজেকে নিয়ে এত বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ছে যে সেখানে সামাজিক বন্ধন, দায়-দায়িত্ব এমনকি সন্তানের দায়ভারও ফিকে হয়ে আসছে।

“নিজের জগৎ, নিজস্ব ব্যস্ততা ও জীবনের দ্রুততার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে বাড়ছে অবসাদ। আর তা থেকে চটজলদি মুক্তি খুঁজতে মানুষ আঁকড়ে ধরছে নানা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মকে। তার ফলেই যৌনতার মতো আবশ্যিক চাহিদাতেও কোপ পড়ছে।”

Exit mobile version