Site icon Health News

দেশের অর্ধেকের বেশি নারী ক্যান্সারের ঝুঁকিতে!

১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশে ৫ কোটি ৮৭ লাখ নারী কোনো না কোনোভাবে ক্যান্সার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

‘ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ উপলক্ষে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজের অনকোলজি বিভাগের এক সংবাদ সম্মেলনে এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, শুধু সারভাইক্যাল ক্যান্সারে (জরায়ু-মুখ) প্রতি বছর ১২ হাজার নারী আক্রান্ত হন এবং এদের মধ্যে ৬ হাজার নারীর মৃত্যু ঘটে।

আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. ইহতেশামুল হক এক সমীক্ষা তুধে ধরে বলেন, দেশে নারীদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বেশি। এর পরই আছে জরায়ু-মুখ ক্যান্সার।

নারীদের ১৬ দশমিক ৯০ শতাংশ স্তন ক্যান্সার, ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ জরায়ু ও জরায়ুমুখ এবং ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত।

পুরুষদের ২৩ দশমিক ৯০ শতাংশ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর, ২২ দশমিক ৯০ শতাংশ মুখ গহ্বর এবং ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত।

সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আব্বাসী বলেন, “দেশে নারীদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রবণতা অনেক বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশের প্রায় ৫ কোটি ৮৭ লাখ নারী কোনো না কোনোভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছে।”

স্তন ক্যান্সার প্রাথমিকভাবে ব্যাথাহীন রোগ বলে রোগীরা এটাকে শুরুতে গুরুত্ব দেন না বলেও অভিজ্ঞতা থেকে বলেন তিনি।

হেড-নেক ক্যান্সার সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা বলেন, অপুষ্টির কারণে অনেকের মুখে লাল বা সাদা ঘা হয়। এসব ঘা যদি দুই থেকে তিন সপ্তাহের বেশি থাকে তাহলে সেগুলো থেকে ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়া গলা ও জিহ্বা ক্যান্সার সৃষ্টিতে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের ভূমিকা রয়েছে।

ফুসফুস ক্যান্সারের বিষয়ে অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিনুল হক বলেন, ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ সবসময় অল্প অল্প জ্বর অনুভব করা। এছাড়া গলার স্বর পরিবর্তন হলে এবং তা যদি আদা, গরম পানি গার্গল করার পরেও না ঠিক হয় তাহলে সেটিও ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ।

এছাড়া বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে কাশি থাকা এবং কাশির সঙ্গে শরীরের কোন স্থানে ব্যথা অনুভূত হওয়া ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ বলে জানান তিনি।

ডা. ইহতেশাম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ২০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রতি বছর নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন আরও দুই লাখ মানুষ। প্রতি বছর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দেড় লাখ মানুষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একটি ক্যান্সার সেন্টার থাকা প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশের এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার কথাও বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “প্রতিটি সেন্টারে অন্তত দুটি রেডিওথেরাপি মেশিন থাকা প্রয়োজন। সেই হিসেবে দেশে অন্তত তিনশটি রেডিওথেরাপি মেশিন থাকা প্রয়োজন। কিন্তু দেশে আছে মাত্র ১৭টি মেশিন আর ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ আছেন মাত্র ১৫০ জন।”

Exit mobile version