২০১২ সালে যেখানে বাংলাদেশে ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার; পাঁচ বছর পরে এসে সেই সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার।
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের ( আইএআরসি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে (গ্লোবোক্যান ২০১৮) প্রাণঘাতী ক্যান্সারের এই আশঙ্কার চিত্র ফুটে উঠেছে।
সেন্টার ক্যান্সার প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ (সিসিপিআর) এবং কমিউনিটি অনকোলজি ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর দেশে নতুন করে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এক লাখ ৫০ হাজার ৭৮১ জন, ২০১২ সালে যে সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২২ হাজার।
প্রতিবছর নতুন ক্যান্সারাক্রান্ত মোট ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৮১ জন রোগীর মধ্যে পুরুষ ৮৩ হাজার ৭১৫ এবং নারী ৬৭ হাজার ৬৬ জন নারী। দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৫৩ জন ধরে এই হিসাব করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে শীর্ষ ৫টি ক্যান্সার হলো- খাদ্যনালীর ক্যান্সার ( ২০ হাজার ৯০১ জন ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ) , ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার ( ১৩ হাজার ৪০১জন, আট দশমিক নয় শতাংশ), স্তন ক্যান্সার ( ১২ হাজার ৭৮৪ জন, আট দশমিক পাঁচ শতাংশ), ফুসফুস ক্যান্সার ( ১২ হাজার ৩৭৪ জন, আট দশমিক পাঁচ শতাংশ) এবং জরায়ু মুখের ক্যান্সার ( আট হাজার ৬৮ জন, পাঁচ দশমিক চার শতাংশ)।
পুরুষদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে খাদ্যনালীর ক্যন্সার ( ১৩ হাজার ৪৮৩ জন, ১৬ দশমিক এক শতাংশ), ফুসফুস ক্যান্সার ( নয় হাজার ২৫৪ জন, ১১ দশমিক এক শতাংশ), ঠোঁট ও মুখ গহ্বরের ক্যন্সার আট হাজার ৮৯৫জন , ১০ দশমিক ছয় শতাংশ), গলবিল বা হাইপোফ্যারিংস ক্যান্সার ( ৬ হাজার ৫৪ জন, সাত দশমিক দুই শতাংশ) ও পাকস্থলীর ক্যান্সার ( ৪ হাজার ৭৯২ জন, পাঁচ দশমিক সাত শতাংশ)।
নারীদের ক্যান্সারের শীর্ষে রয়েছে স্তন ক্যান্সার ( ১২ হাজার ৭৬৪ জন, শতকরা ১৯ শতাংশ), জরায়ু মুখের ক্যন্সার ( ৮ হাজার ৬৮ জন, ১২ শতাংশ), খাদ্যনালীর ক্যান্সার ( ৭ হাজার ৪২৩ জন, ১১ দশমিক ১ শতাংশ), পিত্ত থলির ক্যান্সার ( ৫ হাজার ২৬১ জন, সাত দশমিক আট শতাংশ) এবং ঠোঁট ও মুখ গহ্বরের ক্যন্সার ( ৪ হাজার ৫০৬ জন, ছয় দশমিক সাত শতাংশ)।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান ও সিসিপিআর এর উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ক্যান্সার গবেষণার দায়িত্বপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএআরসি বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যার ভিত্তিতে ক্যান্সার রেজিস্ট্রি থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই ও সমন্বয় করে গ্লোবোক্যান নামে এই ডাটাবেজ প্রকাশ করে, যেখানে বাংলাদেশসহ ১৮৫ দেশের অনুমিত হিসেব দেওয়া থাকে।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে হাসপাতালভিত্তিক এই প্রতিবেদনের শীর্ষ পাঁচ ক্যান্সারের ক্রমবিন্যাসের গড়মিল রয়েছে। কিন্তু জনগোষ্ঠীভিত্তিক নিবন্ধন আমাদের না থাকায় এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করলেও তা প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ নেই।”