অস্ত্রোপচার ছাড়াই সন্তান জন্ম দিতে চেয়েছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি, সেই আশায় ভরসা চাইছিলেন চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু চিকিৎসায় অবহেলায় আঁখি হারিয়েছেন নবজাতক, শেষমেশ নিজেও বিদায় নিয়েছেন।
নবজাতক মারা যাওয়ার সাত দিনের মাথায় মারা গেলেন আঁখি। রোববার রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে দুপুরে মাহবুবা রহমানের মৃত্যু হয়।
নবজাতকের মৃত্যুর পর থেকেই মরদেহ সেন্ট্রাল হাসপাতালের মরচুয়ারিতে ছিল জানিয়ে ধানমণ্ডি থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, আঁখির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় নবজাতকের লাশ তার বাবা ইয়াকুব আলী সুমনের অনুরোধে ময়নাতদন্তের জন্য না পাঠিয়ে হিমঘরে রাখা হয়।
আঁখি মারা যাওয়ার পর তার এবং নবজাতকের মরদেহ একসাথে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লার তিতাসের বাসিন্দা মাহবুবা রহমান আঁখি গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রসবব্যথা উঠলে গত ৯ জুন মধ্যরাতে কুমিল্লা থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসে তার পরিবার।
ইয়াকুব আলীর ভাষ্য, তার স্ত্রীকে ভর্তির সময় ডা. সংযুক্তা হাসপাতালেই আছেন বলা হলেও আসলে তিনি ছিলেন না। সেই রাতে ওই চিকিৎসকের সহকারীরা প্রথমে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। সে সময় জটিলতা তৈরি হলে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুটি ওইদিনই মারা যায়।
সংকটাপন্ন অবস্থায় আঁখিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুরেআ তার মৃত্যু হয়।
আইসিইউ ও জরুরি সেবার মান সন্তোষজনক না হওয়ায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহা ওই হাসপাতালে আপাতত কোনো বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেছেন আঁখির স্বামী ইয়াকুব। সেই মামলায় ডা. সংযুক্তা সাহার দুই সহযোগী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।