Site icon Health News

বাবা-মার ঝগড়া কতটা ভোগায় শিশুদের?

পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়; কিন্তু তা যদি চলতেই থাকে তবে সন্তানদের দীর্ঘমেয়াদী মানসিক স্বাস্থ্য এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কটাই কেবল নয়; বরং বাবা ও মায়ের মধ্যকার সম্পর্কটাও সন্তানের সুস্থতার জন্য জরুরি।

যুক্তরাজ্যের ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েক দশক ধরে পর্যবেক্ষণের পর জানিয়েছে, বাবা-মার ঝগড়ার কারণে ছয় মাসের মতো ছোট শিশুরও হার্টের সমস্যা ও অবসাদগ্রস্ত করে তুলতে পারে।

বাবা-মার অব্যাহত দ্বন্দ্বের মধ্যে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের মস্তিষ্কের গঠন ব্যাহত হয়; দেখা দেয় ঘুমের সমস্যা, উদ্বেগ, অবসাদসহ আরো নানা ধরনের জটিলতা। এমনকি প্রভাবিত হতে পারে তাদের শিক্ষাজীবনও।

এটা ভবিষ্যত সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলে। এমনকি কিশোরদের মধ্যে নিজের শারীরিক ক্ষতি করার আশঙ্কাও দেখা দেয়। অনেকসময় এ ঝগড়ার জন্য নিজেদের দায়ী মনে করে তারা।

গবেষকরা এটাও বলছেন, তবে শিশুদের ওপর প্রভাব যেমন হবে বলে মনে করা হয়, সবসময় তা নাও হতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাবা-মার ডিভোর্স হলে কিংবা তারা আলাদা থাকলে সন্তানের ওপর খুব খারাপ প্রভাব পড়ে বলে মনে করা হত। তবে এখন মনে করা হয়, আলাদা হয়ে যাওয়ার চেয়ে বরং বিচ্ছেদ পূর্ব, বিচ্ছেদ চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ের ঝগড়াই বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অনেক সময় বাবা-মা ভাবতে পারেন, তারা নিজেরা নিজেদের মতো ঝগড়া করছেন, যা হয়ত সন্তানরা বুঝছে না। তবে গবেষকরা বলছেন ভিন্ন; তাদের ভাষ্য, খুব ছোট শিশুরাও এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে।

ছেলে বা মেয়ের শিশুর ওপর এ পর্যবেক্ষণের প্রভাব ভিন্ন হয় বলেও দেখতে পেয়েছেন গবেষকরা।

তারা বলছেন, ঝগড়ায় মেয়ে সন্তানরা মানসিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর ছেলেদের মধ্যে দেখা দেয় মানসিক অবসাদ।

সমস্যার শেষ কেবল এখানেই নয়। শিশুরা কেবল তাদের জীবনেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের খারাপ সম্পর্ক এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয় প্রজন্মের সুখী জীবন যাপনের জন্য এ চক্র ভাঙার উপর জোর দিচ্ছেন গবেষকরা।

তারা বলছেন, বাবা-মা তাদের মধ্যকার কোনো দ্বন্দ্ব যদি সফলভাবে সমাধান করেন, তাহলে সন্তানরাও ইতিবাচক ভাবতে শেখে।

সূত্র: বিবিসি

Exit mobile version