‘আমার হার্ট, তোমার হার্ট, সুস্থ রাখতে অঙ্গীকার করি একসাথে। এ স্লোগানকে সামনে রেখে আজ পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব হার্ট দিবস’।
আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে, বিশ্বের এক নম্বর মরণব্যাধি হচ্ছে হৃদরোগ। কোনো রকম পূর্বাভাস ছাড়াই হৃদরোগ যেকোনো সময় কেড়ে নেয় জীবন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, “ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চলতি বছর থেকে হৃদরোগের পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু হয়েছে। কার্ডিওলজি ও কার্ডিয়াক সার্জারি দুই বিভাগেই জনবলের স্বল্পতা রয়েছে। জনবল সংকট দূর করা গেলে আরও বেশি মানুষের সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।”
গত এক যুগে শুধু রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ হাজার ৮৪০ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বিশেষায়িত এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ৭৩৮ রোগী। গত তিন বছরে সরকারি হাসপাতালগুলোতে হৃদরোগীর বেশি মৃত্যু হচ্ছে বলে সরকারি জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে। চিকিৎসার অভাবে হৃদরোগীরা বেশি মারা যাচ্ছেন বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক বলেন, “দেশে হৃদরোগীর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, চিকিৎসা ব্যবস্থা সে তুলনায় অপ্রতুল। অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে হৃদরোগে সর্বাধিক মৃত্যু হয়। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় ভবিষ্যতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।”
সরকারি হাসপাতালের কয়েকজন পরিচালক ও চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, যন্ত্রপাতি, জনবলসহ নানামুখী সংকটের কারণে দেশের জেলা সদরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে হৃদরোগ সেবা বিশেষ করে কার্ডিয়াক সার্জারি চিকিৎসা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। আটটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অল্পবিস্তর হৃদরোগ সেবা দেওয়া হচ্ছে। এসব হাসপাতালে ক্যাথল্যাবের পাশাপাশি টিএমএলআর মেশিন, স্টিম সেল, রেনাল কার্ড, ইসিপি থেরাপি মেশিন বছরের পর বছর ধরে বিকল। করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) এবং লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে স্থানীয় চিকিৎসকরা রোগীকে ঢাকায় রেফার করতে বাধ্য হন। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানীর সেবাকেন্দ্রে আনার পথেই মারা যাচ্ছেন অনেক রোগী।