Site icon Health News

বেশিরভাগ হাসপাতালের আইসিইউর মান নিয়ে প্রশ্ন

এখন ঢাকার বেশ কিছু হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ থাকলেও তার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

জীবন সঙ্কটে থাকা রোগীদের আইসিইউতে রাখা হলেও সাধারণ রোগীদের আইসিইউতে রেখে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তদরকি শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসাপাতাল ও ক্লিনিক) অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন।

রোগীদের জিম্মি করে আইসিইউতে রাখায় বছর দুয়েক আগে উত্তরার কেয়ার স্পেশালাইজড অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালকে সাত লাখ টাকা জরিমানা করেছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই কারণে রিজেন্ট হাসপাতালকে করা হয় ছয় লাখ টাকা জরিমানা।

এরকম কিছু হাসপাতাল ব্যবসা বাড়ানোর জন্য আইসিইউ খুললেও বেশিরভাগ আইসিইউই মানসম্পন্ন নয় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

তারা বলছেন, সরকারি এবং হাতেগোণা কয়েকটি হাসপাতালের বাদে বাকি আইসিইউগুলোতে নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যাও অপ্রতুল। আইসিইউ পরিচালনার জন্য কোনো নীতিমালাও নেই।

আইসিইউ খুলে এভাবে জিম্মি করে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য উঠে এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইসিইউ সেবা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইসিইউগুলোতে পোর্টেবল এক্সরে মেশিন, এবিজি মেশিন, পোর্টেবল আলট্রাসনোগ্রাম, পোর্টেবেল ভেন্টিলেটর, ডায়ালাইসিস ফ্যাসিলিটির মতো অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতির সংখ্যা কম। শয্যা সংখ্যার অনুপাতে ভেন্টিলেটরও নেই।

এসব আইসিইউতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সার্বক্ষণিক থাকেন না বলেও প্রমাণ পেয়েছে অধিদপ্তর, যদিও সার্বক্ষণিক কনসালটেন্ট থাকা বাধ্যতামূলক।

অনেক আইসিউতে মেডিসিন, নিউরো সার্জারি, সার্জারি, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি ও গাইনি বিশেষজ্ঞ পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (এনআইসিইউ) এ শিশু বিশেষজ্ঞ থাকলেও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ রয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত নয়।

হাসপাতালগুলোতে নার্সের সংখ্যা পর্যাপ্ত হলেও আইসিইউ বা এনআইসিইউতে তাদের দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা নেই বলেই উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

আইসিইউ চললেও তার জন্য নীতিমালা এখনও না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ও বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব।

তিনি বলেন, “আইসিইউ পরিচালনার কোনো গাইডলাইন্স নেই। যার কারণে হাসপাতালগুলো যেভাবে পারছে মুনাফা করে নিচ্ছে। সরকারের উচিত আইসিইউ সেবার জন্য সেবামূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া, তাহলে যদি কিছুটা লাগাম টানা যায়।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক পরিচালনার জন্য দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন্স) ১৯৮২ অনুযায়ী ক্লিনিক বা হাসপাতালের অনুমোদন নিয়ে কেউ আইসিইউ, এনআইসিইউ, সিসিইউ খুলতে পারে না। অথচ ক্লিনিকগুলোতে সেটাই চলছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আমরা কাজ শুরু করেছি।”

কাজের ব্যাখ্যায় নিতে বলেন, “বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আমরা মনিটরিং শুরু করেছি।”

ডা. জাহাঙ্গীর জানান, আইসিইউর দুষ্প্রাপ্যতা কমিয়ে আনতে ২০২২ সালের মধ্যে দেশের সব জেলা হাসপাতালগুলোতে পাঁচ শয্যার আইসিইউ চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Exit mobile version