Site icon Health News

রাইফার মৃত্যু: চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রীর নির্দেশ

রাফিদা খান রাইফার মৃত্যুতে যে তিন চিকিৎসকের অবহেলার প্রমাণ তদন্তে পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী, যে সংস্থাটি চিকিৎসকদের সনদ দিয়ে  থাকে।

রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে মন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।

দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাইফা গলায় ব্যথা নিয়ে গত ২৮ জুন বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরদিন রাতে তার মৃত্যু হয়।

‘ভুল চিকিৎসায়’ তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে সাংবাদিকরা অভিযোগ তোলার পর ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি হয়।

সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়, যাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা এবং গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এই তিন চিকিৎসক হলেন-  ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত এবং ডা. শুভ্র দেব।

দেবাশীষ ও শুভ্রকে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করেছে ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিধান রায় তাদের হাসপাতালের চাকরি না করেন না। ম্যাক্স কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই চিকিৎসককে আর ডাকবেন না তারা।

 

সিভিল সার্জনের কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, “রাইফা যখন তীব্র খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয় তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং ওই সময়ে থাকা সংশ্লিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও এ রকম জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই তাদের ছিল না।

“শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন সময়ে আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যাহা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্তের সুপারিশ অনুযায়ী ম্যাক্স হাসপাতালের লাইসেন্স নিয়ে অনিয়ম আগামী ১৫ দিনের মধ্য দূর করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এদিকে ম্যাক্স হাসপাতালে রোববার অভিযান চালিয়ে কয়েকটি অনিয়ম পেয়ে তাদের ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এর প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রামের বেসরকারি সব হাসপাতাল ও ক্লিনিক সেবা বন্ধ করে দেওয়ার পর রোগীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

Exit mobile version