Site icon Health News

লাশ লুকানোর চেষ্টা, ব্যর্থ হয়ে উধাও সবাই!

রংপুরে একটি ক্লিনিকে এক রোগীর মৃত্যুর পর পালিয়েছে বেসরকারি ওই হাসপাতালের সব কর্মী।

শনিবার বিকালে শহরের সাগর পাড়ায় রংপুর আধুনিক জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাসিমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়।

স্বজনরা বলছেন, অস্ত্রোপচার শেষে রক্ত দেওয়ার পর নাসিমার খিঁচুনি শুরু হয়। বিকাল ৪টায় তার মৃত্যু হয়।

নাসিমা রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বেইলি ব্রীজ এলাকার মনু মিয়ার স্ত্রী। মনু মিয়া ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

নাসিমার মামী ইছারন বেগম সাংবাদিকদের বলেন, টিউমার অপারেশন করার জন্য বৃহস্পতিবার বেসরকারি ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তার ভাগ্নিকে। সেই রাতেই অস্ত্রোপচার হয়েছিল।

তিনি বলেন, “আজ দুই ব্যাগ রক্ত নাসিমার শরীরে দেয়। এরপর নাসিমার খিঁচুনি শুরু হয়। হাসপাতালের লোকজনকে ডাকলেও তারা কেউ আসেনি। এর মধ্যে নাসিমা মারা যায়।”

এরপর হাসপাতালের মালিক এবং ব্যবস্থাপকের কক্ষে গিয়ে কাউকে পাননি বলে জানান ইছারন। তিনি বলেন, “নার্স, আয়া ও ওয়ার্ড বয়দেরও দেখা পাই নাই।”

ঘটনাটি শুনে হাসপাতালটিতে পুলিশ পাঠানো হয় বলে কোতোয়ালি থানার ওসি বাবুল মিয়া জানান।

থানার এসআই দুলাল মিয়া বলেন, “সেখানে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ম্যানেজার, নার্স, আয়া ও ওয়ার্ডবয় কাউকে পাইনি। লাশ পাহারা দিচ্ছিলেন তার মামী ইছারন বেগম।”

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কয়েকজন পরিচালক এবং ব্যবস্থাপকের মোবাইল নম্বর ফোন করেও সবগুলো ফোন বন্ধ পেয়েছেন বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

এদিকে কেউ না থাকায় অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যান্য রোগীরা।

আখতার হোসেন নামে এক রোগীর বাবা আতিয়ার রহমান বলেন, “একজন রোগীর মৃত্যুর পর থাকি ডাক্তার, ম্যানেজার, নার্স কাকো খুঁজি পাওয়া যাইতোচে না। বড় চিন্তার মধ্যে আছি।”

রংপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান কোয়েল জানান, রংপুর আধুনিক জেনারেল হাসপাতালের কোনো লাইসেন্স নেই। এটি সমিতির তালিকাভুক্তও নয়।

তিনি বলেন, “কিছু ওয়ার্ডবয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে কাজ শিখে কয়েকজন মিলে ওই হাসপাতালটি খুলে বসেছে। সেখানে নিয়ম-নীতির বালাই নেই বলে শুনেছি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিভিল সার্জনকেও বলেছিলাম।”

রংপুরের সিভিল সার্জন জাকিরুল ইসলাম হেলথ নিউজকে বলেন,“ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহ লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এতে সফল না হয়ে তারা পালিয়ে যায়।”

তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

Exit mobile version