রাজশাহীতে লিভার সিরোসিসের রোগী আগের চেয়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সাধারণত হেপাটাইটিস এ, বি, সি ভাইরাস, ফ্যাটিলিভার ডিজিজে আক্রান্ত ও নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে লিভার সিরোসিস হয়ে থাকে।
চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস ও অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করে পরিকল্পনা অনুযায়ী জীবন যাপন করা হলে প্রাণঘাতী এই রোগ এড়ানো সম্ভব।
হেপাটাইটিস এ, বি, সি ভাইরাস, ফ্যাটিলিভার ও জন্ডিস রোগীদের মধ্যেই লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।
রামেকের হেপাটোলজি ও গ্যাস্ট্রোএন্টোরোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের ধারণা, রাজশাহী জেলার জনসংখ্যার প্রায় ১০ ভাগ মানুষ লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত। এর মাঝে প্রায় ৩ ভাগ চিকিৎসা নিচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, লিভার সিরোসিস হচ্ছে লিভারের অসুখের সবচেয়ে শেষ অবস্থা। এটা একদিনে হয় না। লিভারের বিভিন্ন সমস্যা থেকে ধীরে ধীরে তা সিরোসিসে রূপ নেয় এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের লিভার বিভাগের প্রধান ডা. হারুন আর-রশীদ হেলথ নিউজকে বলেন, “লিভার সিরোসিস একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ। এই রোগে একবার আক্রান্ত হলে আর নির্মূল করা যায় না। লিভারের আকৃতি প্রকৃতি সব নষ্ট হয়ে যায়। যারা সিরোসিসে আক্রান্ত হয় তাদের ক্ষেত্রে আমরা শুধু নিয়মিত চিকিৎসাই করতে পারি।”
অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান ও নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের ফলে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়া প্রবণতা বাড়ে।
রক্তদান বা গ্রহণের সময় শরীরে এই উপাদান প্রবেশ করতে পারে। তাই রক্ত দেওয়ার বা নেওয়ার আগে রক্ত পরীক্ষা করার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। নিয়মিত ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার কথাও বলছেন তারা।
ডা. হারুন বলেন, “সকল প্রকার মসলাদার খাবার, জাঙ্কফুড ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবে। রাস্তাঘাটের খাবার বর্জন করে বাসায় দৈনিক খাদ্য তালিকায় তেলের পরিমাণ কমিয়ে বেশি করে শাকসবজি খেতে হবে।”
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তাই সব ওষুধ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।
রক্তপাত হওয়া, বমি হওয়া, পেটে পানি চলে আসা, অজ্ঞান হওয়ার উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎনকরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রাথমিক অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে খারাপ অবস্থায় আসে। যখন দ্বিতীয় পর্যায়ে যায়, তখন লিভার প্রতিস্থাপনের কিছু বিষয় থাকে। লিভার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ডিকমপেনসেটেট অবস্থায় চলে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।