Site icon Health News

হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছেই

হাজার ছাড়ানোর পরদিনই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আগের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেল

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১২৪৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সংখ্যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ। তাদের নিয়ে এ বছর হাসপাতালে যাওয়া রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে এই বছর এপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৮।

এইডিস মশার আশঙ্কাজনক বিস্তারের কারণে এবার ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নেবে বলে বিশেষজ্ঞরা শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন। সেই ধারায়ই রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এবছর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো দিনে হাসপাতালের ভর্তি রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছিল। সেদিন হাসপাতালে গিয়েছিলেন ১০৫৪ জন। মৃত্যু হয়েছিল ৭ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৮টটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যে ১২৪৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭০৯ জন ঢাকায় এবং ৫৩৭ জন ঢাকার বাইরের।

নতুন ভর্তি রোগীদের নিয়ে এ বছর সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ হাজার ১৪৩ জনে।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৭৯১ জন রোগী। এদের মধ্যে ঢাকায় ২৫৩০ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬১ জন।

জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, মৃত্যু হয়েছিল ৩৪ জনের। জুলাইয়ের প্রথম ১২দিনেই সেই সংখ্যা পেরিয়ে গেছে। জুলাইয়ের প্রথম ১২ দিনে ৮১৬৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের।

মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১০৩৬ জন এবং জুন মাসে ৫৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন এবং জুন মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।

গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বর্ষা পূববর্তী জরিপের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকার ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৫টিতে ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশার ঝুকিপূর্ণ উপস্থিতি পা্ওয়া গেছে। এ অবস্থায় ঢাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।

এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।

এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।

Exit mobile version