উদ্বোধনের পরও ঝুলে আছে খুলনা মেডিকেলের আইসিইউ ইউনিট

এম রহমান, হেলথ নিউজ | ২৩ জুন ২০১৮, ১২:০৬ | আপডেটেড ২৩ জুন ২০১৮, ১২:০৬

khulna-m-hospital

প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলেও চালু হয়নি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউ।

ফলে খুলনায় ব্রেন-স্ট্রোক, হার্ট-স্ট্রোকের মুমূর্ষু রোগীদের এখনও উচ্চমূল্যে বেসরকারি হাসপাতালেই যেতে হয়।

গত ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী খুলনা সার্কিট হাউজের জনসভায় এই আইসিইউ বিভাগ উদ্বোধন করলেও এখনও গণপূর্ত বিভাগ তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেনি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বারবার চিঠি দেওয়া হলেও আইসিইউ ভবন তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। গণপূর্ত বিভাগের দাবি, তিন দফা চিঠি দেওয়া হলেও তাতে সাড়া দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দুই পক্ষের এই রশি টানাটানিতে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ সেবা।

চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা জানান, খুলনা বিভাগের প্রায় ২৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলাদা আইসিইউ নেই। বর্তমানে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে রেখে মুমূর্ষু রোগীদের এই চিকিৎসা দেওয়া হয়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ হেলথ নিউজকে বলেন, আইসিইউতে যেসব চিকিৎসা যন্ত্রপাতি থাকে, পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে তা নেই। বিদ্যমান যন্ত্রপাতি দিয়ে সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

“এই হাসপাতালে আইসিইউ অনেক আগে চালু হওয়া উচিত ছিল। আইসিইউ ছাড়া জটিল ও মুমূর্ষু রোগীরা থাকে মৃত্যুঝুঁকিতে।”

এই সুযোগে খুলনায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো আইসিইউতে রোগী রাখার জন্য নিচ্ছে বিশাল অঙ্কের টাকা।

এ অবস্থায় ২০১১ সালে গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের মাঝে সরকারিভাবে আইসিইউ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দোতলা এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় চারটি কেবিন, ১০টি আইসিইউ বেড, ১৬টি পোস্ট অপারেটিভ বেড নিয়ে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেবা আর নিচতলায় অতি জরুরি সার্জারি রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ইমার্জেন্সি সার্জারি ইউনিট রয়েছে।

নির্মাণ কাজ শেষ হলেও দীর্ঘদিন স্যানিটারি ফিটিংস ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণ দেখিয়ে ভবনটি হস্তান্তর করেনি গণপূর্ত বিভাগ। উপরন্তু তাদের পক্ষ থেকে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. এ টি এম মোর্শেদ হেলথ নিউজকে বলেন, ‘ভবনটি হস্তান্তরের জন্য বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নানা কারণ দেখিয়ে পিডব্লিউডি (গণপূর্ত) ভবনটি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি। ফলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যাশিত আইসিইউ সেবা চালু করা যায়নি।”

অন্যদিকে খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন হেলথ নিউজকে বলেন, “আমরা অনেক আগেই ভবনের কাজ শেষ করেছি। এরই মধ্যে তিনবার ভবনটি বুঝে নেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। সর্বশেষ ২৩ মে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে সাড়া দেয়নি।”

তিনি বলেন, হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পে নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট ও সরবরাহ ব্যবস্থা ছিল না। পরে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার এই কাজের জন্য একটি প্যাকেজ জমা দেওয়া হয়েছে। সরকার এরই মধ্যে প্রায় ২০ কোটি টাকার একটি থোক বরাদ্দ অনুমোদন করেছেন। কিন্তু ওই অর্থ কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের নামে ছাড়পত্র হওয়ায় তা সংশোধন করতে সময় লাগছে। এই থোক বরাদ্দ থেকে অর্থ পাওয়া গেলে আইসিইউ ভবনের অক্সিজেন প্লান্ট ও সরবরাহ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হবে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও নির্মাণ ঠিকাদারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আইসিইউ ভবন নির্মাণ শেষ হলেও তা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতায় সময় ক্ষেপণ হয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউ কক্ষ ডেকোরেশন ও বিদ্যুৎ সংযোগে জটিলতা, ছাত্রসংগঠনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ভবনের মালামাল ভাংচুর ও নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি না হওয়ায় অনেকটা সময় কেটেছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোর্শেদ বলেন, হাসপাতালের পুরাতন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় আইসিইউ ভবন নির্মাণের পর তাতে বিদ্যুৎ সরবরাহে আপত্তি জানায় বিদ্যুৎ বিভাগ। পরে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা বকেয়া বিল পরিশোধের পর সেখানে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন করে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন একান্ত সচিব ড. নমিতা হালদার আইসিইউ ভবনটি পরিদর্শনের সময় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের পর এখানে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। ফলে পিছিয়ে যায় ভবন হস্তান্তর প্রক্রিয়া। এছাড়া নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণের কাজটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আইসিইউ চালুর জন্য ২০ চিকিৎসকসহ ১৪৪ জন লোকবল প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এই জনবল নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ৩০টি শয্যা এবং ৪৮ ক্যাটাগরির ১৮৭টি যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

কিন্তু এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি বলে হাসপাতাল কর্মকর্তারা জানান। ফলে কবে নাগাদ প্রত্যাশিত এই সেবা মানুষ ভোগ করবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ্জামান দ্রুত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগ চালুর দাবি জানান।

তিনি হেলথ নিউজকে বলেন, দ্রুত সরকারি এই হাসপাতালের আইসিইউ চালুর জন্য জনবল ও যন্ত্রপাতি বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। যাতে সঙ্কটময় মুহূর্তে খুলনার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরা স্বল্প খরচে এই চিকিৎসা সেবা নিতে পারে।

বিষয়:

নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

ডেঙ্গু: আরো ১০ মৃত্যু

ডেঙ্গুর টিকা নিয়ে ভাবছে সরকার

যে দুই কারণে প্রাণঘাতি হচ্ছে ডেঙ্গু

তাপদাহ ও দূষণে হৃদরোগে আক্রান্তদের মৃত্যুর ঝুঁকি

ডেঙ্গু: আক্রান্ত ছাড়াল ৪৪ হাজার

ডেঙ্গুতে একদিনে ১০ জনের মৃত্যু

মশা নিধনে ‘র‌্যাট’ নামছে

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছাড়াল ২০০

ডেঙ্গু মহামারীর পর্যায়ে যায়নি

কাজে ফিরছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকরা

শুকনো ফলের বাজার দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী

নবজাতক ও মায়ের মৃত্যু: জামিন পেলেন ২ চিকিৎসক

চিকিৎসকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

জটিল রোগীর ডেঙ্গু শনাক্ত হলেই হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ

পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ল

হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগী ২০ হাজার ছাড়াল

দুদিন চেম্বার, অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখবেন গাইনি চিকিৎসকরা

ডিএনসিসির স্থাপনাতেই এডিস মশার লার্ভা

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১০০ হল

ডেঙ্গু রোগীর প্লাটিলেট নিতে হয় কখন?

স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু

আঙুর কেন খাবেন?

ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সব টিপস...

চকলেটে ব্রণ হয়?

এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন...

      ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

300-250
promo3