কাপড়চোপড়-আসবাবের কারণে কী করোনা ছড়ায়!

সেরীন ফেরদৌস, স্বাস্থ্যকর্মী, কানাডা, ফেসবুক টাইমলাইন থেকে, হেলথ নিউজ | ১১ এপ্রিল ২০২০, ২১:০৪ | আপডেটেড ১১ এপ্রিল ২০২০, ০৯:০৪

fashion-footwear-grass-6319

করোনা-ভাইরাস প্যানডেমিক নিয়ে যতোই সচেতন হচ্ছি আমরা, ততই নিত্য-নতুন প্রশ্ন জন্ম নিচ্ছে মনে! খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এটা। যতদিন না ভাইরাসটির কোনো সুরাহা হবে, সামাজিক মাধ্যমে নানারকম বিভ্রান্তিকর তথ্যপ্রকাশ বন্ধ না হবে এবং মানুষের মনের ভয়/আতংক দুর না হবে,ততদিন প্রশ্ন থাকবেই!

অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে যে, পোশাকআশাকের মাধ্যমে করোনা-ভাইরাস কি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বাহিত হতে পার! কি হবে অনেক মানুষের সংসারে আসবাবপত্র, শাড়িচুড়ি আর হাড়ি-খুন্তি নাড়ানাড়ির বেলায়!

করোনা ভাইরাসটি আমাদের সবার জন্য আচানক এবং নতুন। হঠাৎ এবং অত্যন্ত তীব্রগতিতে আমাদের আক্রমণ করে দিশেহারা করে দিয়েছে পুরো পৃথিবীকে! আমাদের বুঝে উঠতে সমস্যা হচ্ছে, কিভাবে এবং কত উপায়ে একে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি! তবে এটা প্রমাণিত যে, ভাইরাসটি এমনি এমনি বাতাসে ভেসে বেড়ায় না।

কিভাবে নানা জিনিসপত্রের সাথে ভাইরাসটি রিঅ্যাক্ট করে, তার উপর এখন পরযন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো গবেষণা হয়নি।

টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রপিক্যাল রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অ্যানা ব্যানার্জি বলেন, এটা নির্ভর করে মানুষটির পেশার উপর। একটি ব্যস্ত গ্রোসারীতে কাজ করা, হাসপাতালে কাজ করা মানুষ যেভাবে পরনের কাপড় ধোয়াধুয়ি করবে, অন্যদের বেলায় তা বাধ্য নয়! কেউ যদি আপনার কাপড়ের উপর কফ না-ফেলে, বা করোনা ভাইরাসবহনকারী কোনো মানুষের ব্যবহারয জিনিস সরাসরি আপনার কাপড়ে না-লাগে তবে অসুবিধা কি! সাধারন মানুষ যারা বাইরে যাবে, কেনাকাটা করবে মোটামুটি দূরত্ব বজায় রেখে, তাদের কাপড় নিয়ে খুঁতখুঁত না-করলেও চলবে।

আমেরিকার হাফিংটন-পোস্ট সম্প্রতি এ ব্যাপারে বেশকিছু ডাক্তার এবং এপিডেমিওলজিস্টদের গাইডলাইন এবং পরামর্শ প্রকাশ করেছেন। তাদের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এণ্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর মতে, বেশিরভাগ করোনা রোগীর সংক্রমণ ঘটেছে সরাসরি ফুসফুসের ড্রপলেটের মাধ্যমে। কাপড়-চোপড়, আসবাব-পত্র, হাড়িপাতিল, বইপত্র , শেলফ-পর্দা, কসমেটিকস, জুতা-স্যান্ডেল ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ানোর কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ তাদের হাতে নেই বলে জানিয়েছেন তারা।

ওদিকে টরন্টোর হাম্বার রিভার হাসপাতালের ইনফেকশাস ডিজিজ ফিজিশিয়ান ও চিফ অফ স্টাফ মাইকেল গার্ডাম বলেন, বাইরে পরা কাপড় নিয়ে সকলের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নাই। যাঁরা সরাসরি করোনা রোগী নাড়াচাড়া করছেন, তারা সহজে ধোয়া যায় এমন কাপড় পরবেন এবং বাড়ি এসে ধুয়ে ফেলবেন।

তবে তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের টাই ব্যবহার করতে বারণ করেছেন, কারন টাই ধোয়া হয় না সাধারণত। ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ ডাইরেক্টর ডাঃ ক্রেইগ জেনস আরো একটু বাড়িয়ে বলেন, বাইরে গেলে কোলাকুলি, হাত ধরাধরি ইত্যাদি না-করলে কাপড় ধোয়ার কি দরকার!

মার্কিন জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ক্যারল উইনার আবারও ড্রপলেটের উপর জোর দিয়ে বলেন, যদি আক্রান্ত কারো মুখ-নাক থেকে ছিটানো ভাইরাসসমৃদ্ধ পানি অন্য কারো কাপড়ের উপর পরে, তবে স্বভাবতই, সেটা শুকিয়ে ভাইরাস অকারযকর হতে একটু সময় নেবে! এইটুকু লক্ষ্য আমাদের রাখতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সূতির কাপড়ের তুলনায় পলিস্টার কাপড়ে ভাইরাসটি শুকাতে দেরী করে। তবে উইনার যাদের ওয়াশিং মেশিন নেই তারা গরম পানিতে সাবানসহ কাপড় ধোয়ার পরামর্শ দেন। যদি ড্রায়ার ব্যবহার করে কেউ, তাহলে একটু বেশি সময় ধরে শুকানো ভালো। তবে এ নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হতে তিনিও নিষেধ করেছেন।

কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় কে ধোবে! কিভাবে ধোবে! এ প্রশ্নের উত্তরে উইনার জানান, আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় অন্য সবার কাপড় থেকে অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে এবং আলাদাভাবেই ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট পাউডার যেটাতে ব্লিচ আছে, সেটা বেশি কারযকর বলে মনে করেন উইনার। কাপড়ে লাইসল ব্যবহার করতে নিষেধ করেন তিনি। যদি ভাইরাস আক্রান্ত পরিবেশে কোনো স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করে, তবে সে বাড়ি ফিরে পোশাকগুলো পাল্টে আলাদা ব্যাগে রাখবে এবং পরে সুযোগমতো ধোবে।

তবে সকল বিশেষজ্ঞরাই সব কথার শেষ কথা বলেন, করোনা ভাইরাস শুধু শুধু বাতাসে ভেসে বেড়ায় না। বাইরের পরিবেশ ঘুরে এলে হাত না-ধুয়ে মুখে-চোখে-নাকে হাত না ছোঁয়ানোই ভালো। বাড়িতে কোনো মেইল, প্যাকেজ বাইরে থেকে এলে সেগুলো খুলে নিয়ে পরে হাত ধুলেই চলে। হাতে, কাপড়ে, গ্লাভসে, মাস্কে জীবাণুটি থাকতেই পারে, কিন্তু সেটা আপনি আপনার শরীরের এন্ট্রি পয়েন্টগুলোতে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন কি না সেটাই বড় কথা!

বিষয়:

নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু

আঙুর কেন খাবেন?

ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সব টিপস...

চকলেটে ব্রণ হয়?

এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন...

      ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

300-250
promo3