কিডনি প্রতিস্থাপনে ‘সংশোধন হবে’ আইন
নিজস্ব প্রতিবেদক, হেলথ নিউজ | ১ মে ২০২৫, ২৩:০৫ | আপডেটেড ৩ মে ২০২৫, ১১:০৫

দেশে কিডনি রোগীদের জন্য কিডনি প্রতিস্থাপন সহজ করতে মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তাতে ‘কিডনি সোয়াপ’ বা ডোনার অদল-বদলের সুযোগ তৈরি হবে। বৈধ কিডনিদাতার তালিকায় যুক্ত হবে রোগীর ভাতিজা-ভাতিজি এবং ভাগ্নে-ভাগ্নির নাম।
২০১৮ সালের ‘মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন’ অনুযায়ী, বাবা-মা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রীসহ ২২ ধরনের নিকটাত্মীয় কিডনি দান করতে পারেন।
এ আইনে কিছু বিষয় পরিবর্তনের জন্য গত সোমবার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা.সায়েদুর রহমান বলেন, “কিছু অসামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষেত্রে আমরা স্পেকট্রামটা একটু বড় করছি। কিডনি দানের ক্ষেত্রে আমরা সোয়াপ অ্যালাউ করব। অর্থাৎ আপনার ডোনার আছে নিকটাত্মীয়,কিন্তু আপনার সঙ্গে ম্যাচ করছে না। আবার আরেকজন রোগীর ডোনার আছে কিন্তু তার সঙ্গেও ম্যাচ করছে না, আপনার সঙ্গে হচ্ছে। আবার আপনার ডোনারের সঙ্গে ওই রোগীর ম্যাচ করছে। সেক্ষেত্রে তাদের একসঙ্গে সার্জারি করে দুজনেরটা দুজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করে দেওয়া হবে। সহজ বাংলায় যাকে বলে অদল-বদল।”
আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে সায়েদুর রহমান বলেন, “এটা কবে হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। আমরা এখনও মিটিং করছি। কিছু পরিবর্তন করে দুই দফা খসড়া করা হয়েছে। সোমবার মিটিং হয়েছে, হয়ত ১৫ দিনের মধ্যে ড্রাফট আসবে। সেটা দেখতে হবে, আইনটা আমরা পরিবর্তন করছি।”
বর্তমান আইনে যে ২২ ধরনের নিকটাত্মীয় কিডনি দান করতে পারেন, তার মধ্যে ভাতিজা-ভাতিজি এবং ভাগ্নে-ভাগ্নি ছিল না। কিডনি প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি গত ২৩ মার্চের বৈঠকে নিকটাত্মীয়ের সংজ্ঞায় ‘ভাতিজা-ভাতিজি’ এবং ‘ভাগ্নে-ভাগ্নি’ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।
সোয়াপ ট্রান্সপ্ল্যান্ট পদ্ধতিতে কীভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে সে বিষয়েও সুপারিশ এসেছে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছ থেকে।
কিডনি দাতা-গ্রহীতা জুটি বেমানান হলে তারা জোড়া বিনিময় কর্মসূচিতে নাম নিবন্ধন করবে। সেজন্য সরকার একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করবে। সেখান থেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ দুটি জোড়া খুঁজে বের কর করা হবে। এক্ষেত্রে দাতা-গ্রহীতার সব ধরনের অস্ত্রাপচার একই দিনে একই হাসপাতালে করতে হবে।
বাংলাদেশে কিডনি আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করে বেসরকারি সংস্থা কিডনি অ্যাওয়ারনেস, মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)। সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে সংগঠনটি বলছে, বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ মানুষ নানা ধরনের কিডনি রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার রোগীর কিডনি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যায়, যাদের নিয়মিত ডায়ালাইসিস করা বা কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন।
বছরে ৫ হাজার কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হলেও ৪০০টির মত প্রতিস্থাপন করা যায়। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৭ হাজারের বেশি মানুষ কিডনি রোগে ভুগে মারা যান।
ক্যাম্পসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, দাতা সঙ্কটের কারণেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে না। এ কারণে অনেকে মারা যাচ্ছেন। সেজন্য আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন।
“কিডনি প্রতিস্থাপন সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা। কিন্তু তা দেওয়া যাচ্ছে না দাতা না থাকার কারণে। দাতা পাওয়া গেলেও তার অনেকগুলো পরীক্ষা করে ম্যাচ করে কিনা দেখতে হয়। এ সময় দেখা যায় আপনজনদের অনেকের সঙ্গেই মেলে না।
“আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে গ্রহীতারা হন্যে হয়ে খোঁজে যে কিনে নিতে পারে কি না। তাই আইনটি সংশোধন করার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় বলে এসেছি। পরিবর্তনটা করতে হবে যেন যে কেউ চাইলে কিডনি দান করতে পারে। সেটা নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্রীয় একটা কমিটি। কোনো ধরনের অনিয়ম, প্রতারণা যেন করতে না পারে সেটা ওই কমিটি নিয়ন্ত্রণ করবে।”
বিষয়: special1
নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু
আঙুর কেন খাবেন?
ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সব টিপস...
চকলেটে ব্রণ হয়?
এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।
আরও পড়ুন...
ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

