ঘরে ঘরে জ্বর, চাই সাবধানতা
নিজস্ব প্রতিবেদক, হেলথ নিউজ | ৩০ জুন ২০১৮, ১২:০৬ | আপডেটেড ১৪ জুলাই ২০১৮, ১২:০৭
ঋতু পরিবর্তনের সময় বাতাসে আর্দ্রতার ওঠা-নামায় ঘরে ঘরে এখন জ্বরের প্রকোপ। এগুলো বেশির ভাগই ভাইরাসজনিত জ্বর। তাই দ্রুত একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়।
পরিবারের একজনের হলে রক্ষা পায় না অন্যরাও। এই জ্বর বড় বড় জটিলতায় না ফেললেও ভোগায় বেশ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, মানুষের শরীরে ভাইরাস আক্রমণের কয়েক দিনের মধ্যে জ্বর দেখা দেয়। ছড়িয়ে পড়ে একজন থেকে আরেকজনে। বাতাসের মাধ্যমে ও আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি থেকেও ভাইরাস জ্বরের সংক্রমণ হতে পারে।
তবে ভাইরাস জ্বর হলে দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলে জানান তিনি।
“এ জ্বরের জন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার নেই। জ্বরের জন্য তিন বেলা প্যারাসিটামল খেলেই হয়।”
তবে সপ্তাহ খানেকের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ জানান, ভাইরাস জ্বরের কারণে কাঁপুনি, মাথাব্যথা, হাত-পায়ের গিঁটে ব্যথা, খাবারে অরুচি, নাক দিয়ে অঝোরে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চুলকানি, ঠান্ডা, সর্দি, দেখা দেয়।
কারও কারও ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা, বমি ও ডায়রিয়াও হতে পারে।
জ্বর ভোগাবে সাত দিন
ভাইরাসজনিত জ্বর তিন থেকে পাঁচ দিন, বড়জোর সাত দিন থাকবে। তাই ধৈর্য ধরুন। এই সময়ে জ্বরের পাশাপাশি নাক বন্ধ থাকে, নাক দিয়ে পানি পড়ে, গলা খুসখুস করে এবং কাশি হতে পারে।
জ্বর হলে কী করবেন?
ভাইরাস জ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে। খাওয়ার স্যালাইনও খেতে পারেন। জ্বর কমানোর জন্য তিন বেলা প্যারাসিটামল খেতে পারেন। গলাব্যথা করলে কুসুম গরম পানিতে আধা চামচ লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করলে আরাম হবে। খাবারের মধ্যে ভিটামিন সি জাতীয় খাবারে প্রাধান্য দিন। গরম স্যুপ, হালকা গরম পানি, লেবু-চা, লেবুর শরবত খেলে স্বস্তি পাবেন।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত শক্ত খাবার, কড়া দুধ চা ও কফি, কোল্ড ড্রিংকস এসব খাবার শুধু জ্বরের সময় খাওয়া উচিত নয়।
নিয়মিত গোসল
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বলেন, ভাইরাস জ্বরে রোগীকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। কাপড় ভিজিয়ে গা মুছে দিতে হবে।
“ঘরের জানালা, দরজা খোলা রাখতে হবে। হালকা ফ্যান চালিয়ে বা চাইলে হালকা করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ও চালিয়ে রাখতে পারেন। মোট কথা রোগীর ঘরে আলো বাতাস চলাচল করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।”
শিশু বিশেষজ্ঞ ও শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ হেলথ নিউজকে বলেন, “গায়ে অতিরিক্ত কাপড় দিয়ে জ্বর ঠেকানো ক্ষতিকর। বরং বাচ্চাকে রাখুন খোলামেলা। গোসল করানো বন্ধ করবেন না।”
ওষুধের ব্যবহার কমিয়ে পানির ব্যবহারে জ্বর কমানোর পরামর্শ দেন তিনি। বড়রা প্রয়োজনে রাতেও কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারবেন।
জ্বর কমাতে বারবারই গোসলের ওপর জোর দেন অধ্যাপক হানিফ।
অ্যান্টিবায়োটিক দরকার নেই
ভাইরাস জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজে আসে না বলে জানান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ। এই জ্বরের মূল চিকিৎসা উপসর্গ কমানো। যেমন: জ্বর হলে প্যারাসিটামল, নাক বন্ধের জন্য নাসাল স্প্রে, গলা খুসখুসের জন্য গরম লবণ-পানি দিয়ে গড়গড়া করা কাজে লাগে। সঙ্গে চাই প্রচুর পানি ও তরল খাবার এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম।
ডাক্তারের কাছে কখন যাওয়া উচিত
সাত দিনেও জ্বর না কমলে, শ্বাসকষ্ট, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, অসংলগ্নতা, ত্বকে র্যাশ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ভাইরাস জ্বরে ঘরোয়া টোটকা
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাস সংক্রমণের ঘরোয়া ওষুধ ভাতের মাড়। এটা মুত্রবর্ধক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। তাই জ্বর হলে এটা খেলে উপকার পাওয়া সম্ভব। সঙ্গে একটু লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
এছাড়া আদা ও মধুতে আছে শক্তিশালী কিছু উপাদান। ভাইরাস জ্বর থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পেতে শুকনা আদার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
বিষয়: special5
নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু
আঙুর কেন খাবেন?
ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সব টিপস...
চকলেটে ব্রণ হয়?
এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।
আরও পড়ুন...
ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?