ডায়াবেটিস এড়াতে নজরে রাখুন এই খাবার
নিজস্ব প্রতিবেদক, হেলথ নিউজ | ১০ জুলাই ২০২৩, ২১:০৭ | আপডেটেড ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১০:১০
প্রাক ডায়াবেটিস (প্রিডায়াবেটিস) থাকলে পরবর্তীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এরকম ঝুঁকিতে থাকা কোনো ব্যক্তি তার বর্তমান ওজনের মাত্র ৫-৭ শতাংশ কমালেই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
নিউট্রিশন ও ডায়েটেটিকস একাডেমির মুখপাত্র মেরিনা চাপাররো বলেন, এরকম ঝুঁকিতে থাকা কাউকে নির্দিষ্ট কিছু খাবার খেতে নিষেধ করলেই শুরু হয় সমস্যা। কোনো খাবার পুরোপরি বাদ দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বরং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মেনে চললে ও সুষম খাবার খেলে অল্প পরিমাণে যেকোনো খাবারই খাওয়া যায়।
বিশেষভাবে যেসব খাবারের দিকে নজর দেওয়া পরামর্শ দিয়েছেন তিনি, সেগুলো হল-
ডিটক্স জুস ও স্মুদি
ডিটক্স জুস ও স্মুদিতে প্রচুর পরিমাণে ফল থাকে, সাথে থাকে প্রচুর চিনি (হতে পারে তা প্রাকৃতিক চিনি)। ব্লাড সুগারের মাত্রা স্থির রাখতে প্রয়োজনীয় আমিষ ও ফাইবারের কিছুই এতে থাকে না।
চাপাররো বলেন, ওজন কমাতে সহায়তা করবে- এমন মনে হওয়ায় লোকজন এসব খেতে পছন্দ করে। কিন্তু আসলে এ পানীয়গুলোতে প্রচুর ক্যালরি ও চিনি থাকে।
সিরিয়াল
সকালের নাস্তায় সবচেয়ে গ্রহণীয় খাবার এটি। তবে এতেও আমিষ ও ফাইবার থাকে কম। খেতে ভালো লাগলেও অতিমাত্রায় রিফাইন্ড এ খাবার আসলে প্রিডায়াবেটিস ডায়েট। সকালে শরীর এমন থাকে যে তা যেভাবে ইনসুলিন কাজে লাগানো উচিত তা পারে না। সকালে হোল গ্রেইন ওটমিল (যা খুব ধীরে ধীরে হজম হয়) এবং সাথে আমিষের চাহিদা মেটাতে কয়েকটি কাঠবাদাম মিশিয়ে খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।
মধু
মধু প্রাকৃতিক, এটা খুবই স্বাস্থ্যকর- সবসময় এমন কথা শুনলেও চিত্রটা আসলে ভিন্ন। ব্লাড সুগারের কথা চিন্তা করলে মধু, কোকোনাট সুগার, ব্রাউন সগার আর নিয়মিত যে সাদা চিনি ব্যবহার করা তা সব একই।
শুকনো ফল
তাজা ফল খাওয়া সবচেয়ে ভালো। খারাপ নয় হিমায়িত ফলও। তবে শুকনো ফলের সমস্যা হলো শুকানোর সময় যে পরিমাণ চিনি এতে ঘনীভূত হয়ে যায় তা। চাপাররো বলেন, ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা থাকলে একজন ব্যক্তিকে শর্করা গ্রহণের প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। এক মুঠো আঙ্গুরের চেয়ে এক মুঠো কিসমিসে প্রায় দ্বিগুন শর্করা থাকে।
সুগার ফ্রি প্যাকেটজাত খাবার
চাপাররো বলেন, ‘সুগার ফ্রি’ বা ‘ডায়াবেটিস রোগীদের উপযোগী’ খাবার (মূলত বিস্কিট, কেক) অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাতকৃত। স্বাদ বাড়াতে এতে বাড়তি চর্বিসহ অপ্রয়োজনীয় জিনিস যোগ করা হয়। তাই মিষ্টি কিছু খাওয়ার ইচ্ছে হলে প্যাকেটজাত এসব না খেয়ে অল্প পরিমাণে স্বাভাবিক খাবার খাওয়াই ভালো।
হোল হুইট ব্রেড ও পাস্তা
রিফাইন্ড করা ব্রেড ও পাস্তার চেয়ে হোল হুইট ব্রেড ও পাস্তা খাওয়া আসলে ভালো। তবে সমস্যা হলো যখন কোনো ব্যক্তি মনে করে যে ভালো খাবার ইচ্ছেমতো পরিমাণে খেলেও সমস্যা নেই তখন। সবসময় মনে রাখা উচিত যে শর্করা যুক্ত খাবার খেলে- তা স্বাস্থ্য সম্মত হলেও- রক্তের সুগার লেভেল বাড়বে।
গ্রানোলা
গ্রানোলাকে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও আসলে এতে প্রচুর ক্যালরি ও শর্করা থাকে। অর্ধেক কাপ গ্রানোলাতে ৪৫ গ্রাম শর্করা থাকতে পারে। তাই চাপাররোর পরামর্শ হলো গ্রানোলা প্রেমীদের উচিত ওটস, বিভিন্নœ রকমের বাদাম ও অল্প পরিমাণে চিনি দিয়ে নিজের মতো করে গ্রানোলা বানিয়ে নেওয়া।
অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়
হার্টের জন্য ওয়াইন ভালো। আর এক গ্লাস ককটেইল শরীরকে শিথিলও করে। তবে পরিমাণের ওপর নির্ভর করে এটা শরীরের জন্য ভালো না খারাপ সেটি। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ করা হলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। তাই পুরোপুরি বাদ না দিয়ে পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ক্যানে থাকা স্যুপ
এক্ষেত্রে চিনি নয়, বরং সমস্যা হলো সোডিয়াম নিয়ে। ডায়াবেটিস রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই শর্করার পাশাপাশি সোডিয়াম গ্রহণের দিকেও নজর দিতে হবে।
বিভিন্ন টপিং দিয়ে বানানো সালাদ
বিভিন্ন রংয়ের সবজি, ফল, অল্প কিছু আমিষ দিয়ে বানানো সালাদ খুবই স্বাস্থ্যকর। কিন্তু অনেকসময়ই স্বাদ বাড়াতে এতে ফ্রায়েড চিকেন, চিজ ইত্যাদি মেশানো হয়। এতে এর ক্যালরিও যায় বেড়ে।
ক্যানে থাকা ফল
তাজা ফলের মতোই সংরক্ষণ করে রাখা ফলও স্বাস্থ্যকর। তবে ক্যানে থাকা ফলে ঘন, চিনিযুক্ত সিরাপ মেশানো হয় যা স্বাস্থ্যেও জন্য ভালো নয়।
এনার্জি ড্রিংকস
খেলাধুলা বা ব্যায়ামের পর এ ধরনের পানীয় খেলে শরীর যে অনেক চাঙ্গা হয়ে ওঠে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে সমস্যা হলো এসব ড্রিংকসে প্রচুর চিনি, অতিরিক্ত ক্যালরি, শর্করা থাকে যা রক্তের সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যেকোনো শরীরচর্চার পর সাধারণ এক গ্লাস পানি বা তাতে কিছুটা ফলের রস যোগ করে খেলে তা অনেক উপকারী হয়।
আলু, ডাল, ভুট্টা
এসব খাবারে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল থাকায় তা উপকারী। তবে এতে শর্করা থাকায় রক্তের সুগার বাড়াতে পারে।
মাছ ভাজা
মাছ ভাজা খাওয়ার চেয়ে গ্রিল, বেক বা ভাপে রান্না করে খাওয়া ভালো। ভাজা মাছ রক্তের সুগার না বাড়লেও এ ধরণের খাবার হজমে সমস্যা করে এবং শরীরের ইনসুলিন কাজে লাগানোর বিষয়কে প্রভাবিত করতে পারে।
চিপস, প্যাকেটজাত বাদাম
চিপস, প্যাকেটজাত বাদাম খেতে মজার হলেও এতে প্রচুর লবণ থাকে। যা স্বাস্থ্যকর নয়।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
বিষয়: special4
নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু
আঙুর কেন খাবেন?
ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সব টিপস...
চকলেটে ব্রণ হয়?
এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।
আরও পড়ুন...
ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?