রামেক: যেখানে সেবায় সন্তুষ্ট রোগীরা

শারমিন মুক্তা, হেলথ নিউজ | ২৭ জুন ২০১৮, ১৩:০৬ | আপডেটেড ২৭ জুন ২০১৮, ০১:০৬

raj-mdi

হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই এই পরিবর্তন আনা সম্ভবপর হয়েছে, আর প্রয়োজনীয় জনবল পেলে সেবার মান আরও বাড়বে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৪ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির দিন সোমবার থাকে প্রচণ্ড চাপ।

এক সোমবারে গিয়ে দেখা যায়, সেই চাপ মাথায় নিয়েই রোগীদের চিকিৎস সেবা দিতে ব্যস্ত পাঁচজন ইন্টার্ন চিকিৎসক। দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রাজিবও রোগী দেখছিলেন।

তিনি বলেন, “এই ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও ইন্টার্নরা মোটামুটি সবাই উপস্থিত আছেন। তবে চাপ মূলত ইন্টার্ন ডাক্তাররাই সামলায়।”

শুধু এই একটি ওয়ার্ড নয়, সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আরও কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে ৮টা থেকে নিয়মিত চিকিৎসকদের কাজ শুরু হয়ে চলে আড়াইটা পর্যন্ত। এই সময়ে উপস্থিত থাকেন প্রায় সকল চিকিৎসকই। আর সন্ধ্যা ও রাতের শিফটেও রাখা হয় একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক, একজন মেডিকেল অফিসার ও দুজন করে ইন্টার্ন চিকিৎসক।

কয়েক বছর আগেও হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসক না পাওয়ার বিস্তর অভিযোগ ছিল। এখন রোগীদের অভিযোগ কম। ঠিকঠাক মতোই চিকিৎসা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন রোগী।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিডেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বলেন, “ডাক্তার-ইন্টার্ন সবাই মিলেই এই পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে।’

হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রাজশাহীর ঝালুকা এলাকার মজিবুর রহমান (৬০) জানান, গ্যাস্ট্রিক, শ্বাসকষ্ট ও পেটের সমস্যা তার। ভর্তির পরপরই চিকিৎসকরা তাকে দেখেছেন, ওষুধও দিয়েছেন।

বাঘা এলাকা থেকে শাহিনুর রহমান এসেছেন তার অসুস্থ ভাইকে নিয়ে। তিনি বলেন, “দুবছর আগেও হাসপাতালে আসতে ইচ্ছে করত না, ডাক্তাররা খারাপ ব্যবহার করত, ঠিকমতো চিকিৎসা করত না। এখন সেই সমস্যা দেখছি না।”

গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা মোহনপুর এলাকার আফরোজা বলেন, “ডাক্তাররা এখন আগের থেকে একটু বেশি আন্তরিক।”

এক রোগীর অভিভাবক, সংবাদকর্মী জিয়াউল হক বলেন, “অসুস্থ ছেলেকে হাসপাতালে এনে ভালো সেবা পেয়েছি। ছেলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জরুরি বিভাগ থেকে সরাসরি ২৪ নং ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। এই ওয়ার্ডে সব সময় চিকিৎসকদের পাওয়া গেছে। তারা ভালোভাবে দেখেছেন। ছেলে সুস্থ হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আগে গুরুতর রোগী নিয়ে এলেও প্রথমে ভর্তির টিকিট আনতে বলা হত। কিন্তু এখন সেই ব্যবস্থার পরিবর্তন দেখছি।”

১২ নম্বর গাইনি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসকরা ব্যস্ততার মাঝেই রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারজানা  বলেন, চিকিৎসকদের কেউ অনুপস্থিত নেই।

দেড় মাস আগে মেয়েকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেছিলেন রাজশাহীর দুর্গাপুরের উজানখলসী গ্রামের মোমেনা বেগম। পেটে বড় টিউমার হয়েছিল তার মেয়ের। অস্ত্রোপচার করে তা অপসারণ করা হয়েছে।

মোমেনা বেগম বলেন, “এটি আইসি মেয়ে ভালো হইছে। ডাক্তাররা ভালোভাবে দেখেছেন। ডাক্তাররা প্রত্যেকদিন আইসতো।”

৭ নম্বর নিউরো মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. মাহবুব বলেন, “এখানে ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মিড লেভেলের চিকিৎসকরা প্রায় সবাই পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছেন। অনুপস্থিত থাকলেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবেন।”

৮ নম্বর নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে দুপুর দেড়টার দিকে গিয়ে পাওয়া যায়নি চিকিৎসককে। জানতে চাইলে কর্তব্যরত নার্স জানালেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিয়ে নিউরো সার্জারির মহিলা ও শিশু ইউনিটে গুরুতর এক রোগীকে দেখতে গেছেন চিকিৎসক।

এই ওয়ার্ডের অধীনেই পরিচালিত হয় ৩০ নম্বর মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। এখানকার দায়িত্বরত নার্স ময়না খাতুন জানান, জরুরি রোগী এলে ফোন করলেই চিকিৎসক চলে আসেন।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত সাজু জানালেন, সব সময়ই চিকিৎসক পাচ্ছেন তিনি। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বে থাকা লুৎফর রহমান বলেন, “ডাক্তারদের তুলনায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একটু বেশিই চাপ সামলাতে হয়।”

শয্যার তুলনায় দুই-তিনগুণ বেশি রোগী থাকায় তিনি হাসপাতালের শয্যা ও চিকিৎসক বাড়ানোর দাবি জানান।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১২০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও প্রতিদিন চিকিৎসা নেন প্রায় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার রোগী।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসক অনুপস্থিতির কোনো অভিযোগ নেই। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত অনেক রোগী এখানে ভর্তি থাকেন। ফলে ডাক্তার ও ইন্টার্ন চিকিৎসকের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। তবে সবাই আন্তরিকতার সাথে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।”

রামেক হাসপাতাল কর্মকর্তারা জানান, ২০১৪ সাল পর্যন্ত মাত্র ৩০টি ওয়ার্ড ও ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ছিল এটি। বর্তমানে ৫৭টি ওয়ার্ডের অধীনে ১২০০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। তবে সে তুলনায় বাড়েনি জনবল। বর্তমানে প্রয়োজনীয় পদের বিপরীতেই শূন্য রয়েছে ২৬৬টি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান সহকারী ইউসুফ আলী জানান, বর্তমানে রামেক হাসপাতালে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার (চিকিৎসক) পদ রয়েছে ২৪২টি। এর মধ্যে ১৮টি পদ শূন্য রয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির (সিনিয়র নার্স, হাসপাতালের উচ্চমান কর্মকর্তা ইত্যাদি) এক হাজার ১৪৬ পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৪৪টি। তৃতীয় শ্রেণির ১১৯টি পদের মধ্যে ফাঁকা রয়েছে ১৮টি। সবচেয়ে বেশি শূন্য রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির পদ।  ৪২৯টি পদের বিপরীতে ১৮৬টিই শূন্য।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল বলেন, “আমাদের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংকট অনেক বেশি। এসব পদে জনবল নিয়োগ হলে হাসপাতালের পরিবেশ আরো উন্নত হবে।”

বিষয়:

নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

বিএসএমএমইউতে বিনামূল্যে রোগ পরীক্ষা

বেশিরভাগ হাসপাতালের আইসিইউর মান নিয়ে প্রশ্ন

দুর্ঘটনা: চিকিৎসার নীতিমালার গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

মেডিকেলে ভর্তিতে আসন ৫০০ বাড়ল

উপজেলায় ক্যান্সার হাসপাতাল!

খুলনায় চিকিৎসকের সঠিক সময়ে হাজির হতে নির্দেশনা

সব কমিউনিটি ক্লিনিক আসছে ট্রাস্টের অধীনে

ডেঙ্গু থেকে সাবধান

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ৫ অক্টোবর

জাবালে নূরের বাসচাপায় আহতদের চিকিৎসা খরচ সরকারের

ক্যান্সার রোগীর এক-তৃতীয়াংশই হেড-নেকের

দেশে বছরে ২০ হাজার মৃত্যু হেপাটাইটিসে

সরঞ্জাম সঙ্কটে ময়মনসিংহ মেডিকেলের মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন

লোকসানই কারণ: জিএসকে

হরলিক্স রেখে দিয়ে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করছে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন

প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পেলেন বিএসএমএমইউর ৫ শিক্ষার্থী

তৃণমূলে চিকিৎসক দিতে মন্ত্রীকে ডিসিদের সুপারিশ

ওসমানী মেডিকেলে কিশোরী ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে: পুলিশ

যুক্তরাষ্ট্রে পুরস্কার পাচ্ছেন ডা. কনক কান্তি

বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সহায়তার আশ্বাস

স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু

আঙুর কেন খাবেন?

ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সব টিপস...

চকলেটে ব্রণ হয়?

এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন...

      ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

300-250
promo3