ময়মনসিংহ মেডিকেল: বদলে গেল যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, হেলথ নিউজ | ১৪ এপ্রিল ২০১৮, ২২:০৪ | আপডেটেড ৫ জুন ২০১৮, ০২:০৬

34198922_10211125513430856_

আড়াই বছর আগেও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে ছিল নানা অভিযোগ। কিন্তু এখন তা বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও এর আশপাশের এলাকার মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তনের জন্য হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাছির উদ্দিনকে সবাই দিচ্ছেন কৃতিত্ব।

এক বছরের শিশু সুমাইয়া জাহান। বাবা দিনমজুর। হাইড্রো ক্যাফালাস রোগ নিয়ে ভর্তি হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

সুমাইয়ার বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। এত দূর থেকে ময়মনসিংহে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে শিশুটির মা শারমিন জাহানের উত্তর- “টেকা লাগেনা। চিকিৎসাও ভালা।”

সম্প্রতি এক মধ্যরাতে সন্তানসম্ভবা তিনজন নারীর আলট্রাসনোগ্রাফির প্রয়োজন পড়ল। কোথায় করাবেন? এই রাতে কোথাও তা করাতে পারছিলেন না। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেলের ওয়ান স্টপ সার্ভিস থেকেই করানো হল আল্ট্রাসনোগ্রাম।

আড়াই বছর আগেও এই চিত্র ছিল না ময়মনসিংহ মেডিকেলে। কিন্তু বদলে যাওয়া এই হাসপাতাল এখন বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও এর আশপাশের এলাকার আড়াই কোটি মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে।

চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনরা জানান, হাসপাতালে এখন চিকিৎসা সেবার মান যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে খাবারের মানও। সেই সাথে মিলেছে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রাংশ। মিলছে বিনে পয়সায় শতভাগ সরকারি ওষুধ। দালালদের দৌরাত্ম্যও নেই আগের মতো।

১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক হাজার শয্যার বিপরীতে গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার রোগী ভর্তি হচ্ছে। এর বাইরে হাসপাতালে বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৬ হাজার ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রতিদিন ৫ শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসছে।

হাসপাতাল কর্মকর্তারা জানান, এখন ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হওয়ায় রোগী ভর্তি সংখ্যা কমছে বলে চাপ কমছে ওয়ার্ডে, ফলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যাচ্ছে নির্বিঘ্নে।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০০ রোগী থাকে এখানে। বহির্বিভাগে আগে এক হাজার রোগী এলেও এখন ৩ হাজার রোগী আসছে।

গত বছরের ১১ নভেম্বর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চালু করা হয় ইমারজেন্সি ওয়ান স্টপ সার্ভিস। যেখানে রয়েছে এক্স রে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফি, প্যাথলজি ল্যাব ও অপারেশন থিয়েটার। এতে দ্রুত সময়ে রোগ নির্ণয় ও সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

২০১৬ সালের মার্চে অটোমেটিক স্কাল বোন কাটার মেশিন নিউরো সার্জারি বিভাগে স্থাপন করা হয়েছে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত করা হয়েছে শতাধিক সফল অস্ত্রোপচার।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে খাবারের মানের। তিন বছর উচ্চ আদালতে খাবারের ঠিকাদারি নিয়ে ছিল মামলা। সেই মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এখন কম মূল্যে দেওয়া হচ্ছে খাবার। রোগীরা প্রতিদিন পাচ্ছেন মাছ-মাংসসহ উন্নত খাবার।

তারা বলেন, একসময় দরপত্রের উপর ‘সিন্ডিকেটের’ নিয়ন্ত্রণ ছিল। এখন টেন্ডার ড্রপ করা হচ্ছে হাসপাতাল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। এতে অংশগ্রহণ বেড়েছে, কমে গেছে টেন্ডারের মূল্য। দুর্নীতিবাজ এবং উচ্ছৃঙ্খল কর্মচারীদের বদলি করা হয়েছে। প্রায় ৭০ জন দালালকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের হাতে।

৬২ সালের পর গত বছর হাসপাতালের ভেতরে স্থাপন হয়েছে আনসার ক্যাম্প। যেখানে ৫০ জন সশস্ত্র আনসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালের প্রতি মাসে আগে ডিজেল খরচ আসত ৭ লাখ টাকার উপর। নজরদারি বাড়িয়ে তা ৪০ হাজার টাকায় কমিয়ে আনা হয়েছে বলেও জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তারা বলছেন, ওষুধের জন্য ‘ডে-নাইট ফার্মেসি’ খোলা হয়েছে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা প্যাথলজি পরীক্ষা হচ্ছে। খোলা থাকছে রেডিওলজি বিভাগ।

কর্মচারীদের জন্য একটি তহবিল খোলা হয়েছে, কারও মৃত্যু হলে সেখান থেকে এককালীন অর্থ দেওয়া হয়। ফলে কর্মচারীদের কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই পরিবর্তনের পেছনে বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাসির উদ্দিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই।

কীভাবে এই পরিবর্তন সম্ভব হল- জানতে চাইলে ডা. নাছিরের সোজা-সাপ্টা উত্তর- “দায়িত্ববোধ থেকেই এসব করা।”

বিষয়:

নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু

আঙুর কেন খাবেন?

ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সব টিপস...

চকলেটে ব্রণ হয়?

এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন...

      ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

300-250
promo3