ক্লান্তিভাবের কারণ কী? কীভাবে হবে দূর?

ডেস্ক রিপোর্ট, হেলথ নিউজ | ১৮ এপ্রিল ২০১৮, ০০:০৪ | আপডেটেড ৩ জুন ২০১৮, ১২:০৬

eating-wrong-time

ব্যস্ত এ জীবনে প্রায়ই কি ক্লান্তি অনুভব করেন? তাহলে আপনি একা নন। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি)’র হিসেব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ নারী ও ১০ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ প্রায় সময়ই খুব ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভব করে।

জীবনের কোনো না কোনা সময়ই আসতে পারে এ ক্লান্তি। সবসময় ক্লান্তি অনুভব করার সম্ভাব্য কারণ ও তা প্রতিকারের উপায় জানিয়েছে মেডিকেল নিউজ টুডে।

ঘুমের স্বল্পতা

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া ক্লান্তি অনুভব করার অন্যতম একটি কারণ। দ্য আমেরিকান একাডেমি অব স্লিপ মেডিসিন অ্যান্ড দ্য স্লিপ রিসার্চ সোসাইটির মতে, ১৮-৬০ বছর বয়সীদের সুস্থতার জন্য দৈনিক ৭ ঘণ্টা বা তারও বেশি ঘুমের দরকার। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি তিনজনে একজন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমায় না।

পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমালে যে ক্লান্তিভাব সৃষ্টি হয় শরীরে তা বাড়িয়ে দিতে পারে দুর্ঘটনা, উচ্চ রক্তচাপ, অবসাদ, স্থুলতা ও হৃদরোগের ঝুঁকি। তাই সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে কয়েকটি পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেজ্ঞরা।

১. প্রতি রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে, সকালে উঠতে হবে একই সময়ে। ছুটির দিন হলেও মানতে হবে এ রুটিন।

২. সারাদিনে নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুম দরকার, এর বেশি নয়। তাই দিনের বেলা যখন তখন কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলে রাতে ঘুমাতে দেরি হতে পারে বা ভালো ঘুম নাও হতে পারে। তাই দিনের ভেলা ছোট ছোট ঘুম এড়াতে হবে।

৩. ঘুমাতে গিয়ে যদি মাথায় নানা চিন্তা আসে তাহলে বেশিক্ষণ বিছানায় না থেকে উঠে পড়তে হবে। এরপর বসতে হবে অন্ধকার কোনো জায়গায়। ঘুম ঘুম পেলেই আবার যেতে হবে বিছানায়। অর্থাৎ বিছানায় ৫-১০ মিনিটের বেশি জেগে শুয়ে থাকা ঠিক নয়।

৪. শোওয়ার ঘরের পরিবেশটাও ভালো ঘুমের জন্য জরুরি। ঘর হতে হবে অন্ধকার, শান্ত ও থাকতে হবে আরামদায়ক তাপমাত্রা।

৫. সন্ধ্যার পর থেকে ক্যাফেইন গ্রহণের মাত্রা কমাতে হবে। পাশাপাশি ঘুমানোর ঠিক আগেই বাদ দিতে হবে ধূমপান ও মদপান।

ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করার সহজ উপায় হলো স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার গ্রহণ। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল, সবজি, শস্য, আমিষ, শর্করা ও দুগ্ধজাত খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সামান্য কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমেই প্রতিদিন সুষম খাবার খাওয়া সম্ভব।

১. বয়স, ওজন, লিঙ্গ ও শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা অনুযায়ী নির্ধারিত ক্যালরির খাবার গ্রহণ করতে হবে।

২. খাবার খাওয়ার সময় প্লেটের অর্ধেকটা পূর্ণ রাখতে হবে ফল ও সবজি দিয়ে।

৩. লাল চালের ভাত, ওটমিল ইত্যাদির মতো হোল গ্রেইন খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।

৪. কম ফ্যাট বা ফ্যাট বিহীন দুগ্ধজাত খাবার খেলে কম ক্যালরি গ্রহণ সম্ভব হবে।

৫. চর্বিবিহীন আমিষ ও ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ সামুদ্রিক মাছ খতে হবে, বাদ দিতে হবে প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংস, লবণযুক্ত বাদাম ও বীজ।

৬. চিনি খাওয়া কমাতে হবে। চিনি খেলে তাৎক্ষণিকভাবে শরীরে শক্তি পাওয়া গেলেও পরে তা ক্লান্তিভাব নিয়ে আসে।

৭. সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া যাবে না।

৮. নির্ধারিত বিরতিতে খাবার খেতে হবে।

৯. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

সেডেনটারি জীবনযাত্রা

বর্তমানে আমাদের জীবনযাত্রা এমন হয়েছে যে আমরা বসে বসেই বেশি সময় কাটাই। শরীরের ক্লান্তিভাবের জন্য এটাও একটা বড় কারণ। নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে শরীরের শক্তি বেড়ে যায়, শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে, দূর হয় ক্লান্তি।

জর্জিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কমপক্ষে ২০ মিনিট মাঝারি ধরনের শরীরচর্চায় শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র্রের ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস ফিজিক্যাল অ্যাকটিভি গাউডলাইন অনুযায়ী, প্রাপ্ত বয়স্কদেরকে সপ্তাহে আড়াই ঘণ্টার মধ্যম ধরনের ব্যয়ামের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্রিস্ক ওয়াক, ওয়াটার এরোবিকস, সাইকেল চালানো, টেনিস খেলাকে মধ্যম পর্যায়র শরীরচর্চা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অতিরিক্ত চাপ

কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ, অর্থনৈতিক সমস্যা, সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমস্যা, বড় কোনো ঘটনা ইত্যাদি নানা ধরনের চাপের মধ্যে থাকি আমরা। এসব চাপের পরিমাণ কম থাকলে আমরা সতর্ক হতে পারি এবং যে কোনো কাজ আরো ভালোভাবে করার প্রস্তুতি নিতে পারি। তবে এটা যখন অতিরিক্ত পরিমাণে ও দীর্ঘমেয়াদী হয়ে যায় তখন তার প্রভাব পড়ে শরীর ও মনে। এসব চাপের কারণে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে, হতে পারে মাথা ব্যথা।

চাপ দূর করার কিছু পরামর্শ

১. চাপ দূর করতে হলে প্রথমেই জানতে হবে এর কারণগুলো। কারণ না জানলে তা দূর করাও সম্ভব নয়।

২. না বলা শিখতে হবে।

৩. কোনো ব্যক্তির কারণে এ চাপের সৃষ্টি হলে তার সঙ্গ কমাতে হবে।

৪. কোনো কিছু মানসিক কষ্ট দিলে তা নিজের মধ্যে চেপে না রেখে প্রকাশ করতে হবে।

৫. চাপ সৃষ্টিকারী পরিস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে দেখতে হবে। যেমন: যানজটে আটকে থাকলে বিরক্ত না হয়ে নিজের জন্য একান্ত সময় পাওয়া গেছে এমন ভাবতে হবে। শোনা যেতে পারে পছন্দের গান।

৬. চাপ দূর করার অন্য একটি উপায় হলো চাপ সৃষ্টিকারী অপরিবর্তনীয় বিষয়গুলোকে মেনে নেওয়া। যেমন কোনো অসুস্থতা বা আপন কারো মৃুত্য। এসব বিষয় আমরা কখনই পরিবর্তন করতে পারিনা। তাই একে মেনে নেওয়াই ভালো।

৭. অন্যের ভুল ক্ষমা করে দেওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

শারীরিক অসুস্থতা

শরীরচর্চা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, চাপ কমানো ও পর্যাপ্ত ঘুমের পরও ক্লান্তি দূর না হলে শারীরিক কোনো সমস্যা থাকতে পারে। যেমন রক্তস্বল্পতা, থাইরয়েড, ডায়াবেটিসে, বিষণ্নতা, অবসাদ, মুত্রনালীর সংক্রমণ, হৃদরোগ, গর্ভাবস্থা, ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতির কারণেও শরীর ক্লান্ত হতে পারে। এরকম কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

নোটিশ: স্বাস্থ্য বিষয়ক এসব সংবাদ ও তথ্য দেওয়ার সাধারণ উদ্দেশ্য পাঠকদের জানানো এবং সচেতন করা। এটা চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

‘মানসিকভাবে সুস্থ থাকে রাত জেগে মোবাইলের ব্যবহার নয়’

বলিউডের শীর্ষ ৭ নিরামিষভোজী নারী

ঘরে ঘরে জ্বর, চাই সাবধানতা

ইফতারে খাবেন টক দইয়ের যেসব খাবার

তামার পাত্রে রাখা পানি কেন ভাল?

খেতে পছন্দ সোনমের, তবে…

পেটের মেদ ঝরাতে ৫ খাবার

দিনে পানি পান কতটুকু?

প্রিয়াংকার পছন্দ ঘরের খাবার

চকলেট খান না ‘মিস হট চকলেট’

কারিশমা যেভাবে এখনও আকর্ষণীয়

কফি বনাম চা

শরীরচর্চার সঠিক সময় কোনটি?

যোগ দিবসে যোগ সাধনায় হাজারো মুখ

যোগ ব্যায়াম কেন করবেন?

বেশি সময় টিভি দেখেন? সাবধান হোন এখনই

ঘরে জুতা নিয়ে ঢুকছেন তো বিপদ ডাকছেন

শরীরের ঘড়ি ধরে খাবার খাচ্ছেন তো?

ব্যায়াম করবেন তো নজর রাখুন যন্ত্রে

নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন

স্বাস্থ্য সেবায় যাত্রা শুরু

আঙুর কেন খাবেন?

ছোট এ রসালো ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। আঙুরে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ ও পটাশিয়াম। আঙুর কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সব টিপস...

চকলেটে ব্রণ হয়?

এই পরীক্ষাটি চালাতে গবেষকরা একদল ব্যক্তিকে এক মাস ধরে ক্যান্ডি বার খাওয়ায় যাতে চকলেটের পরিমাণ ছিল সাধারণ একটা চকলেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। আরেক দলকে খাওয়ানো হয় নকল চকলেট বার। চকলেট খাওয়ানোর আগের ও পরের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো পার্থক্য তারা খুঁজে পাননি। ব্রণের ওপর চকলেট বা এতে থাকা চর্বির কোনো প্রভাব রয়েছে বলেও মনে হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন...

      ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণে কী করণীয়?

300-250
promo3